কুষ্টিয়া সদর উপজেলার দোয়ারকাদাস আগরওয়াল মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী নূপুর বিশ্বাস মায়া আত্মহত্যা করেছেন। উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষায় পাস করতে না পেরে ১৭ বছর বয়েসী এ কিশোরী অধ্যক্ষের রুমে আত্মহত্যা করেন।
মঙ্গলবার বাড়িতে স্যুইসাইডাল নোট রেখে কলেজে যায় হরিনারায়ণপুরের মাছ ব্যবসায়ী বাবুল হোসেনের মেয়ে নূপুর। সেখানেই বিষপান করে আত্মহত্যা করেন। পুলিশ স্যুইসাইডাল নোটটি উদ্ধার করেছে।
কলেজের অধ্যক্ষ আসাদুজ্জামান জানান, টেস্ট পরীক্ষায় চার বিষয়ে ফেল করে নূপুর। কিন্তু সে বাড়িতে দুই বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়ার কথা জানায়।
অধ্যক্ষ জানান, দুই বিষয়ে ফেলের কথা জেনে মেয়েকে নিয়ে নূপুরের মা কলেজে আসেন। শিক্ষকদের কাছে জানতে পারেন মেয়ে ৪ বিষয়ে ফেল করেছেন। এরপর তিনি মেয়েকে বকেন।
এ সময় নূপুর স্বাভাবিক ছিল না। কথাবার্তা ছিল অসংলগ্ন। কথা বলতে বলতেই সে মাটিতে পড়ে যায়। তখন তার হাত থেকে একটি কাঁচের শিশি ছিটকে পড়ে।
কলেজের এক শিক্ষক জানান, শিক্ষকরা নূপুরকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। সেখান থেকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায় নূপুর।
নূপুরের মা বলেন, কলেজে যাওয়ার পর সে স্বাভাবিক ছিল না। সম্ভবত বাড়িতেই সে বিষপান করেছিল।
নূপুর স্যুইসাইডাল নোটে লিখেছেন, “আব্বু আম্মু, আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমি কখনও চাই না আমার জন্য তোমরা কষ্ট পাও। আমি ভালভাবে পড়াশোনা করতে চেয়েছিলাম, অনেক স্বপ্ন ছিল আমার।
আমি জানি, আমাকে নিয়েও অনেক স্বপ্ন ছিল তোমাদের। আমি যে তোমাদের একমাত্র মেয়ে। আমি পৃথিবী থেকে চলে গেলাম। আমাকে ক্ষমা করো। আর আমার জন্য একটুও কষ্ট পাবে না।
আমি চাই আমার মরাটা যেন স্বাভাবিকভাবে মাটি দেয়া হয়। আত্মহত্যা করলে পুলিশ আসে, তারা যা সব করে আমার যেন করা না হয়। এভাবে মরে গেলে তা কোথায় যেন পাঠায় লাশ কাটার জন্য। ওটাতে আমার খুব ভয় লাগে।
আমাকে স্বাভাবিকভাবেই মাটি দিও। পুলিশরা যেন অন্য সবার মত আমার লাশকে কষ্ট না দেয়, আমায় যেন স্পর্শ না করে। আমায় ভালভাবে মাটি দিও।
ও আম্মু, আমার যে মরে যাওয়ার পর অনেক ভয় লাগবে, আমাকেতো কবরে জায়গা দেবে না, আমার যে খুব কষ্ট হবে। ক্ষমা করে দিও। কলেজের স্যাররা চাইলে হয়তো আমার ভবিষ্যৎ নষ্ট হতো না।’
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার কর্মকর্তা আরিফ জানান, জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ দাফন করা হয়েছে।