দুই দলের সামনেই ইতিহাস গড়ার হাতছানি। বাংলাদেশ জিতলে প্রথম শিরোপা। আর ভারতের সামনে পঞ্চম শিরোপার সুবাস। এমন সমীকরণ নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ ও ভারত। আবহাওয়ার পূর্বাভাষ ঠিকঠাক মেনে নিয়ে বৃষ্টিও নামে। বাংলাদেশের ইনিংস তাতে নেমে আসে ৪৬ ওভারে। তাতে কি! অবস্থা এমনই, বল আর মাঠে না গড়ালেও অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ পেয়ে গেছে নতুন রাজা।
বিশ্বকাপের শুরু থেকেই বাংলাদেশের কিশোররা ছিল দারুণ ছন্দে। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই ছিল হট ফেভারিট। শেষ হাসিটা ফুটলো ইয়াং টাইগারদের মুখেই। আরেক ফেভারিট ভারতকে ৩ উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হলো বাংলাদেশ।
অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালে জয় পেতে মুখিয়ে ছিল ইয়াং টাইগাররা। তাদের এ জয়, ক্রিকেটের যে কোন ভার্সনে বাংলাদেশের প্রথম বিশ্বকাপ অর্জন। অবশ্য ইয়াং টাইগাররা তাদের বিশ্বকাপ মিশনে চার বার প্লেট গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। কিন্তু সুপার লীগের ফাইনালে ওঠা ছিল এবারই প্রথম। প্রথম ফাইনালেই বাজিমাৎ।
প্রতিপক্ষ ভারতও কম যায় না, তারা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। এর আগে চার বার শিরোপা ঘরে তুলেছে। তাদের কাছাকাছি আছে এবারের আসরের ষষ্ঠ স্থান অর্জন করা অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়া এ পর্যন্ত শিরোপা জিতেছে তিন বার।
ফাইনালের পথে দুই দলই নিজেদের সেরা খেলাটা উপহার দিয়েছে। গ্রুপ পর্বে বৃষ্টির কারণে এক পয়েন্ট খুঁইয়েছে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশ বা ভারত, কোন ম্যাচেই পরাজয়ের স্বাদ নেয়নি। যোগ্য দল হিসেবেই উঠেছে নক আউট পর্বে।
বৃহস্পতিবার সুপার লীগের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে শক্তিশালী নিউজিল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে ইয়াং টাইগাররা। সেই ম্যাচে শতরানের সুবাস নেন মাহমুদুল হাসান জয়।
এর আগে, প্রথম সেমিফাইনালে ভারতীয় যুবকরা ১০ উইকেটের জয় পায় পাকিস্তানের বিপক্ষে। ভারতের পক্ষে যশস্বী জয়সোয়াল অপরাজিত শতরানের ইনিংস খেলেন।
গত ১৭ জানুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকার পচেফস্ট্রুমে শুরু হয় অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ১৩তম আসর। এবারের বিশ্বকাপে ৪টি গ্রুপে অংশ নেয় ১৬টি দল। এরমধ্যে ৪টি গ্রুপেরই পয়েন্ট টেবিলের শেষ দুইটি দল অংশ নেয় প্লেট গ্রুপে। শীর্ষ দুইটি করে মোট ৮টি দল খেলে সুপার লীগে। আইসিসি’র পূর্ণাঙ্গ সদস্যদের মধ্যে একমাত্র আয়ারল্যান্ড বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে উঠতে বর্থ হয়। তারা ইউরোপ অঞ্চলের বাছাই পর্ব থেকে বিদায় নেয়।
এবার প্লেট গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইংল্যান্ড। রানার আপ হয়েছে শ্রীলংকা।
গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ জিম্বাবুয়েকে ৯ উইকেটে এবং স্কটল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যাক্ত হয়। নিট রানরেটে (+৫.০০৮) বাংলাদেশ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সুপার লীগে ওঠে।
৩০ জানুয়ারি সুপার লীগের তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে ইয়াং টাইগাররা স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারায় ১০৪ রানের বিশাল ব্যবধানে।
৬ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ড ৬ উইকেটে ধরাশায়ী হয় বাংলাদেশি তরুণদের কাছে।
অন্য দিকে, ৪ বারের চ্যাম্পিয়ন ভারত গ্রুপ পর্বে সবগুলো ম্যাচে জয় পায়। তারা শ্রীলংকাকে হারায় ৯০ রানে। দ্বিতীয় ম্যাচে জাপানের বিরুদ্ধে পায় ১০ উইকেটের জয়। শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারায় ৪৪ রানে (ডি/এল)।
ভারত ২৮ জানুয়ারি সুপার লীগের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারায় ৭৪ রানে। এরপর ৪ ফেব্রুয়ারি প্রথম সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে ১০ উইকেটে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে।