পুলিশী হেফাজতে এফএডিসি কর্মকর্তার মৃত্যুতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করেছেন তার সহকর্মীরা। এতে উত্তাল হয়ে ওঠে এফডিসি চত্বর। রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্ছল থানা হাজতে মৃত্যু হয় ওই এফডিসি কর্মকর্তার।
নিহত এফডিসি কর্মকর্তার নাম নুরুল ইসলাম বাবু। তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি)-এর ফ্লোর ইনচার্জ ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সেনবাগে। তার বয়স ৪৫ বছর।
বাবুর মৃত্যুর জন্য এফডিসির কর্মকর্তা ও র্কচারিরা পুলিশকে দায়ী করছেন। তারা বলছেন, পুলিশ হেফাজতে একজন সরকারি কর্মকর্তার মৃত্যু কিভাবে হয়? তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চান।
অন্যদিকে, পুলিশ বলছে, বাবু থানা হাজতে গলায় চাদর পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এফডিসিতি পুলিশী পাহারা বাড়ানো হয়েছে।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী হোসেন খান বলেছেন, সিসি ক্যামেরা ফটেজে স্পষ্টই দেখা গেছে বাবু আত্মহত্যা করেছে। নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে এমন তথ্য সঠিক নয়।
আজ সোমবার বাবুর রহস্যজনক মৃত্যুর কারণে এফডিসির সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। পরে জহির রায়হান কালার ল্যাব প্রজেকশন রুমে আরেকটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় বাবুর মৃত্যু প্রসঙ্গে তার সহকর্মীরা কয়েকটি প্রশ্ন উত্থাপন করেন। তারা মনে করেন, পুলিশী নির্যাতনের ফলে বাবুর মৃত্যু হয়েছে।
বাবুর স্বজনরাও মনে করেন, পুলিশ নির্যাতন করে বাবুকে মেরে ফেলেছে। তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন।
শনিবার সন্ধ্যায় ধর্ষণ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় বাবুকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। রোববার ভোর ৪টায় থানা হেফাজত থেকে বাবুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
এফডিসির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ করেন। বলেন, এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের কথা আমরা সরকারের কাছে জোড়ালোভাবে উত্থাপন করবো। এ সময় তিনি জানান, বাবুর ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
একটি সূত্র বলছে, কাওরান বাজারের এক মাছ ব্যবসায়ীর স্ত্রীর সাথে দুই বছরের বেশি সময় ধরে বাবুর পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। ওই নারী কিছুদিন ধরে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাইছিলেন। কিন্তু বাবু সম্পর্ক চালিয়ে যেতে চাইছিল। এ কারণে ওই নারীকে ব্ল্যাকমেইল করছিলেন বাবু। এতে স্বামীর সহায়তায় ওই নারী বাবুর বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশে ধরিয়ে দেন।