হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিবী আজ ১৭ মার্চ ২০২০ তারিখে। জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকীতে আর্ট নিউজের পক্ষ থেকে বিনম্র শ্রদ্ধা। জন্মশতবার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধুর সংক্ষিপ্ত জীবনী আর্ট নিউজের পাঠকদের জন্য। তথ্য সংগ্রহে সহায়তা নেয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু অনলাইন আর্কাইভ থেকে।

১৯২০, ১৭ মার্চ, গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেন।
১৯২৭: সাত বছর বয়সে গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জাতির জনকের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবন শুরু হয়।
১৯২৯: বঙ্গবন্ধুকে গোপালগঞ্জ সীতানাথ একাডেমীর (বা পাবলিক স্কুলে) তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়।
১৯৩৪: মাদারীপুরে ইসলামিয়া হাইস্কুলে পড়ার সময় বঙ্গবন্ধু বেরীবেরি রোগে আক্রান্ত হন।
১৯৩৭: অসুস্থতার কারণে বঙ্গবন্ধুর লেখাপড়া বন্ধ ছিলো, আবার তা শুরু হয়।
১৯৩৮: ১৬ জানুয়ারী: বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা একে ফজলুল হক গোপালগঞ্জ মিশন স্কুল পরিদর্শনে এলে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার পরিচয় হয়।
১৯৩৯: সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ সভা করার দুঃসাহসের কারণে বঙ্গবন্ধু প্রথম কারাবরণ করেন।
১৯৩৮: মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি বেগম ফজিলাতুননেসার সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন।
১৯৪২: অসুস্থতার কারণে একটু বেশি বছর বয়সে বঙ্গবন্ধু এন্ট্রাস (প্রবেশিকা, বর্তমান এসএসসি) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এই বছরেই কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন। এই কলেজের বেকার হোস্টেলের ২৪ নম্বর কক্ষে তিনি থাকতে শুরু করেন।
১৯৪৪: কুষ্টিয়ায় অনুষ্ঠিত নিখিল বঙ্গ মুসলিম ছাত্রলীগের সম্মেলনে যোগদান করেন। এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক ভাবে তিনি রাজনীতিতে অভিষিক্ত হন। এই বছরই ফরিদপুর ডিস্ট্রিক্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নিযুক্ত হন।

১৯৪৬: বঙ্গবন্ধু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কলিকাতা ইসলামি কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সহকারি নিযুক্ত হন। এই বছরই প্রাদেশিক নির্বাচনে তিনি মুসলিম লীগের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
১৯৪৭ : বঙ্গবন্ধু কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইসলামিয়া কলেজ থেকে বি.এ পাশ করেন।
১৯৪৭ : ৬ সেপ্টেম্বর, ঢাকায় গণতান্ত্রিক যুব কর্মীদের এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
১৯৪৮ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন।

১৯৪৮ : ২৩ ফেব্রুয়ারি, তৎকালীণ প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে ঘোষণা করলে বঙ্গবন্ধু তার তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন।
১৯৪৮ : ২ মার্চ, রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবীতে বঙ্গবন্ধুর প্রস্তাবে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়।
১৯৪৮ : ১১ মার্চ, রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবীতে সাধারণ ধর্মঘট আহ্বানকালে বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হন।
১৯৪৮ : ১৫ মার্চ, বঙ্গবন্ধু কারাগার থেকে মুক্তিপান।
১৯৪৮ : ১১ সেপ্টেম্বর: ফরিদপুরের কর্ডন প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন করার জন্য বঙ্গবন্ধু আবার গ্রেফতার হন।
১৯৪৯ : ২১ জানুয়ারী: বঙ্গবন্ধু কারাগার থেকে মুক্তিপান।

১৯৪৯ : ৩ মার্চ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারিরা তাদের দাবী দাওয়া আদায়ের উদ্দেশে ধর্মঘট ঘোষণা করলে বঙ্গবন্ধু তার প্রতি সমর্থন জানান।
১৯৪৯ : ২৯ মার্চ: আন্দোলনে যোগ দেয়ার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বঙ্গবন্ধুকে অযৌক্তিক ভাবে জরিমানা করে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কর্মচারিদের আন্দোলনের প্রতি তার সমর্থন জানান।
১৯৪৮ : ২০ এপ্রিল: বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সৃষ্ট আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়।
১৯৪৯ : ২৩ জুন: পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হয় এবং জেলে থাকা অবস্থায় বঙ্গবন্ধু যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৪৯ : ২৭ জুলাই: বঙ্গবন্ধু জেল থেকে মুক্তিপান। মুক্তি পেয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে না গিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন।
১৯৪৯ : পূর্ব বাংলায় দুর্ভিক্ষ শুরু হলে খাদ্যের দাবীতে তিনি আন্দোলন শুরু করেন।
১৯৫০ : ১ জানুয়ারি: এই আন্দোলনের কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
১৯৫২ : ১৪ ফেব্রুয়ারি: বাংলা রাষ্ট্র ভাষার দাবীতে বঙ্গবন্ধু কারাগারে অনশন শুরু করেন।
১৯৫২ : ২১ ফেব্রুয়ারি: রাষ্ট্রভাষার দাবীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদ মিছিলে গুলি চলে। শহীদ হন সালাম, রফিক, বরক সহ অনেকে। জেল থেকে বঙ্গবন্ধু এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেন।
১৯৫২ : ২৭ ফেব্রুয়ারি: টানা অনশনে অসুস্থ বঙ্গবন্ধুকে স্বাস্থ্যগত কারণে মুক্তি দেয়া হয়।
১৯৫৩ : ১৬ নভেম্বর: প্রাদেশিক আওয়ামী মুসলিম লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৫৩ : ৪ ডিসেম্বর:
প্রথম সাধারণ নির্বাচনে সব বিরোধী দল মিলে যুক্তফ্রন্ট গঠন করে।
১৯৫৪ : ১০ মার্চ: সাধারণ নির্বাচনে ২৩৭টি আসনের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট ২২৩টি আসনে বিজয়ী
হয়। বঙ্গবন্ধু গোপালগঞ্জের আসনে বিজয়ী হন।
১৯৫৪ : ২ এপ্রিল: যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রীসভা গঠিত হয়।
১৯৫৪ : ১৪ মে: বঙ্গবন্ধু যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রীসভায় বয়োঃকনিষ্ঠ মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।
১৯৫৪ : ৩০ মে: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রী সভা বাতিল করেন। বঙ্গবন্ধু এ দিনই করাচী থেকে ঢাকায় প্রত্যাবর্তন করেন এবং গ্রেফতার হন।
১৯৫৪ : ২৩ নভেম্বর: বঙ্গবন্ধু জামিনে মুক্তি পেলে জেল গেটেই তাকে নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করা হয়।
১৯৫৪ : বঙ্গবন্ধু কারাগার থেমে মুক্তি পান।
১৯৫৫ : ৫ জুন: বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৫৫ : ১৭ জুন: ঢাকার পল্টনের জনসভা থেকে বঙ্গবন্ধু প্রথম পূর্ব পাকিস্তানের সায়ত্ত্বশাসন দাবী করেন।
১৯৫৫ : ২১ অক্টোবর: আওয়ামী মুসলিম লীগের বিশেষ কাউন্সিল অধিবেশন ধর্ম নিরপেক্ষতা আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দ প্রত্যাহার করে নতুন নামকরণ করা হয় আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধু পুণরায় দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৫৮ : ৭ অক্টোবর: জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার শাহেদ আলীর উপর আক্রমণ এবং তার মৃত্যুর প্রেক্ষাপটে ইস্কান্দার মির্জা পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারী করেন।
১৯৫৮ : ১২ অক্টোবর: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। এসময় তার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দেয়া হয়।
১৯৫৯ : ৫ অক্টোবর: বঙ্গবন্ধু মুক্তি পান। কিন্তু তার গতিবিধির উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়। এ সময় তিনি বার বার গ্রেফতার হন এবং ছাড়া পান।
১৯৬২ : ২ জুন: চার বছরের সামরিক শাসনের অবসান ঘটলে ১৮ জুন শেখ মুজিব মুক্তি লাভ করেন।
১৯৬৪ : ২৫ জানুয়ারী: বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে আওয়ামী লীগকে পুনরুজ্জীবিত করা হয়।
১৯৬৪ : ৫, ১১ মার্চ: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিুর রহমানের নেতৃত্বে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বিরোধী দাঙ্গা প্রতিরোধ কমিটি গঠিত হয়।
১৯৬৪ : ২৬ জুলাই: বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সম্মিলিত বিরোধি দল কঅপ (কম্বাইন্ড অপজিশন পার্টি গঠিত হয়।)
১৯৬৫ : রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কঅপ-এর পক্ষ থেকে মিস ফাতিমা জিন্নাহকে প্রার্থী দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধু ফাতিমা জিন্নাহর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ১৪ দিন আগে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়।
১৯৬৬ : ১৮ মার্চ: আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে ৬ দফা গৃহীত হয়। এরপর তিনি ৬ দফার পক্ষে দেশব্যাপী ব্যাপক প্রচারণা শুরু করেন। এ সময় তাকে সিলেট, ময়মনসিংহ ও ঢাকা থেকে বার বার গ্রেফতার করা হয়। ৩ মাসে তিনি ৮ বার গ্রেফতার হন। শেষ বার তাকে গ্রেফতার করে নির্জন কারাবাসে রাখা হয়।
১৯৬৮ : ৩ জানুয়ারি: পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুকে এক নম্বর আসামী করে মোট ৩৫ জন বাঙালি সেনা ও সিএসপি অফিসারের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে বিছিন্ন করার অভিযোগে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে।
১৯৬৮ : ২৮ জানুয়ারি: নিজেকে নির্দোষ দাবী করে আদালতে লিখিত বিবৃতি দেন। এই বিবৃতি পড়ে বঙ্গবন্ধুর মুক্তি ও তার মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে আন্দোলন গনঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। ছাত্র সমাজ ছয় দফার সমর্থনে ১১ দফা দাবী উপস্থাপন করে।
১৯৬৯ : ৩০ জানুয়ারি: উদ্ভূত পরিস্থিতি ঠেকাতে আলোচনার জন্য বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে মুক্তির প্রস্তাব দেয় পাকিস্তানি জান্তা সরকার। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সে প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেন।
১৯৬৯ : ১৫ ফেব্রুয়ারি: ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের অভ্যন্তরে মামলার অন্যতম আসামী সাজেন্ট জহুরুল হককে নির্মম ভাবে হত্যা করা হলে বিক্ষুব্ধ জনতা রাজপথে নেমে আসে।
১৯৬৯ : ২২ ফেব্রুয়ারি: তীব্র গণআন্দোলনের মুখে সরকার ‘রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান ও অন্যান্য’ শিরোনামে মিথ্যা মামলাটি প্রত্যাহার করে নেয়।
১৯৬৯ : ২৩ ফেব্রুয়ারি: ডাকসু এবং পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিবকে সম্বর্ধনা দেয়ার আয়োজন করে। ওই সভায় শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
১৯৬৯ : ১০ মার্চ: রাজনৈতিক সংকট নিরসনে আইয়ুব খান গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেন। গোল টেবিলে ৬ দফার পক্ষে বঙ্গবন্ধু দৃঢ় অবস্থান নেন। তবে ঐ বৈঠক ব্যর্থ হয়।
১৯৬৯ : ২৫ মার্চ: রাওয়ালপিন্ডি গোল টেবিল বৈঠক ব্যর্থ হবার প্রেক্ষিতে আইয়ুব খান ইয়াহিয়া খানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। ইয়াহিয়া সামরিক শাসন জারী করেন।
১৯৬৯ : ২৮ নভেম্বর: জাতির উদ্দেশে বেতার ভাষণে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ১৯৭০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে রাজনৈতিক কর্মকান্ডের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। ওই বছরের শেষ ভাগে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথাও ঘোষণা করেন।
১৯৭০ : ১ জানুয়ারি: ১৯৫৮ সালের পর প্রথম রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। বঙ্গবন্ধু প্রথম দিন থেকেই ৬ দফার পক্ষে দেশব্যাপী ব্যাপক প্রচারণা শুরু করেন।
১৯৭০ : ৪ জুন: নির্বাচনকে সামনে রেখে মতিঝিল ইডেন হোটেল প্রাঙ্গণে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। কাউন্সিলে আওয়ামী লীগ একক ভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
১৯৭০ : ৫ জুন: পূর্ব পাকিস্তানের নির্বাচনী এলাকা বিষয়ে সরকারের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়। পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদে ৩১০টি আসন আর জাতীয় পরিষদে ১৬৯টি আসন নির্দিষ্ট করা হয়।
১৯৭০ : ১৫ আগস্ট: প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন যথাক্রমে ৭ ও ১৭ ডিসেম্বর।
১৯৭০ : ৮ অক্টোবর: ইসলামাবাদ থেকে ১৯টি রাজনৈতিক দলের প্রতীক ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আওয়ামী লীগকে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ করা হয়। স্মর্তব্য যে, ১৯৫৪ সালে পূর্ব বাংলার সাধারণ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের প্রতীক ছিলো নৌকা।
১৯৭০ : ২৮ অক্টোবর: বঙ্গবন্ধু বেতার ও টেলিভিশনে নির্বাচনী ভাষণ দেন। তিনি বলেন, প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে দিয়েই আওয়ামী লীগের জন্ম। তার সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যে দিয়েই আওয়ামী লীগের বিকাশ। তিনি দেশবাসীর কাছে ছয় দফার পক্ষে ম্যান্ডেট চান।
১৯৭০ : ১২ নভেম্বর: পূর্ব বাংলায় ভয়াবহ ঝড় এবং জলোচ্ছ্বাসে ৫ লাখেরও বেশি মানুষ মারা যান। বঙ্গবন্ধু তার নির্বাচনী প্রচারণা স্থগিত করে ত্রাণ কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি এই অঞ্চলের জনগণের প্রতি সরকারের চরম উদাসীনতা তুলে ধরেন। এই সময় সোনার বাংলা শ্মশান কেনো শিরোনামে তথ্য সম্বলিত একটি পোস্টার জাতিকে নাড়া দেয়।
১৯৭০ : ৭ ডিসেম্বর: বন্যা-দুর্গত এলাকা বাদে জাতীয় পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে জাতীয় পরিষদে আওয়ামী লীগ ১৬৭টি আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করে। পাকিস্তান পিপলস পার্টি পায় ৮৮টি আসন।
১৯৭০ : ১৭ ডিসেম্বর: প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানে ২৯৮টি আসন লাভ করে।
১৯৭১: ৩ জানুয়ারি: আওয়ামী লীগের সকল নির্বাচিত সদস্য ৬ দফার ভিত্তিতে শাসনতন্ত্র প্রণয়ন তথা ৬ দফা বাস্তবায়নের শপথ গ্রহণ করেন। আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি এই রবীন্দ্র সংগীতের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হয়। বঙ্গবন্ধু জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে বাঙালি জাতির মুক্তির সংকল্প ব্যক্ত করেন। শপথ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী সংগীতের পর ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গানটি পরিবেশিত হয়।
১৯৭১ : ১০ জানুয়ারি: প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ঢাকায় আসেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তিন দফা বৈঠক করেন। ৪ দিন পর ফিরে আসার সময় তিনি বলেন, শেখ মুজিব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন।
১৯৭১ : ২৭ জানুয়ারি: জুলফিকার আলী ভূট্টো ঢাকা এসে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা করেন। কিন্তু ভূট্টোর সঙ্গে আলোচনা ব্যর্থ হয়।
১৯৭১ : ১৩ ফেব্রুয়ারি: এক সরকারি ঘোষণায় বলা হয় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ঢাকায় ৩ মার্চ ১৯৭১ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করেছেন।
১৯৭১ : ১ মার্চ: জাতীয় পরিষদ অধিবেশনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠক শুরু হয় হোটেল পূর্বাণীতে। ওই দিনই আকস্মিকভাবে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনিদিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। সারা বাংলা ক্ষোভে ফেটে পরে। বিক্ষুদ্ধ জনসমুদ্রে পরিণত হয় রাজপথ। বঙ্গবন্ধু এটাকে শাসকদের আরেকটি চক্রান্ত বলে চিহ্নিত করেন। তিনি ২ মার্চ ঢাকায় এবং ৩ মার্চ সারা পূর্ব পাকিস্তানে হরতাল আহবান করেন।
১৯৭১ : ২ মার্চ: ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর ডাকে স্বতঃস্ফুর্ত হরতাল পালিত হয়। উত্তাল জনস্রোতে ঢাকা পরিণত হয় বিক্ষোভের শহরে। সরকার ঢাকা শহরের পৌর এলাকায় সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কারফিউ জারী করেন।
১৯৭১ : ৩ মার্চ: বিক্ষুদ্ধ জনতা কারফিউ উপেক্ষা করে রাজপথে নেমে আসে। সামরিক জান্তার গুলিতে মারা যান ৩ জন। আহত হন কমপক্ষে ৬০ জন। এই সময় পুরো দেশ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে পরিচালিত হতে থাকে।

১৯৭১ : ৭ মার্চ: বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক যুগান্তকারী ভাষণে ঘোষণা করেন, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণে স্পষ্ট হয়ে যায় স্বাধীন বাংলাদেশের ভবিষ্যত। সারাদেশে শুরু হয় এক অভূতপূর্ব অসহযোগ আন্দোলন।
১৯৭১ : ১৬ মার্চ: বিস্ফোরণমুখ বাংলাদেশে আসেন ইয়াহিয়া খান। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার দীর্ঘ আলোচনা শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু তার গাড়ীতে কালো পতাকা উড়িয়ে হেয়ার রোডে প্রেসিডেন্ট ভবনে আলোচনার জন্য যান।
১৯৭১ : ১৭ মার্চ: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫১তম জন্মদিন। এই দিন ইয়াহিয়া খানের সংগে দ্বিতীয় দফা আলোচনা থেকে ফিরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বঙ্গবন্ধু বলেন, এদেশে জন্ম দিনই বা কি আর মৃত্যু দিনই বা কি আমার জনগণই আমার জীবন।
১৯৭১ : ২৩ মার্চ: কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ প্রতিরোধ দিবস পালনের ঘোষণা দেয়। সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি ভবনে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বঙ্গবন্ধু এদিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন।
১৯৭১ : ২৫ মার্চ: পৃথিবীর ইতিহাসে এক নৃশংসতম কালরাত্রি ২৫ মার্চ। এদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনে মানুষের ঢল নামে। সন্ধ্যায় খবর পাওয়া যায় ইয়াহিয়া ঢাকা ত্যাগ করেছেন। এ সময় বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সাথে বৈঠক করেন। তারপর সাড়ে এগারটায় শুরু হয় অপারেশন সার্চ লাইট। ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যা।
১৯৭১ : ২৬ মার্চ: ১২-৩০ মিনিট ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হবার আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাবার্তা ওয়ারলেস যোগে চট্টগ্রামের জহুরুল আহমেদ চৌধুরীকে প্রেরণ করেন। চট্টগ্রাম বেতার থেকে আওয়ামী লীগ নেতা হান্নান বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার বাণী স্বকন্ঠে প্রচার করেন। পরে ২৭ মার্চ চট্টগ্রামে অবস্থিত অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মেজর জিয়াউর রহমান ঐ ঘোষণা পূণঃপাঠ করেন। বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে করাচীতে নিয়ে যাওয়া হয়।
১৯৭১ : ২৭ মার্চ: বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ এবং স্বাধীনতার ঘোষণার আলোকে বীর বাঙালি গড়ে তোলে স্বতঃস্ফুর্ত প্রতিরোধ। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের এক গৌরবোজ্জল অধ্যায়।
১৯৭১ : ১৭ এপ্রিল: তৎকালীণ মেহেরপুর মহকুমার ভবের পাড়ার (বৈদ্যনাথ তলা) আমবাগানে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারে নতুন মন্ত্রীসভা গঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহম্মদ ঘোষণা করেন আজ থেকে (১৭ এপ্রিল) বৈদ্যনাথ তলার নাম মুজিবনগর এবং অস্থায়ী রাজধানী মুজিবনগর থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালনা করা হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি এবং তার অনুপস্থিতিতে সৈয়দ নজরুল ইসলামকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয়।
১৯৭১ : ২৫ মে: ক্রমেই মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হতে শুরু করে। সংগঠিত হয় প্রবাসী সরকার। ২৫ মে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র চালু হয়। এই কেন্দ্রের সিগনেচার টিউন ছিলো জয় বাংলা বাংলার জয়। কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রচারিত হতে থাকে। এই কেন্দ্র থেকে প্রচারিত ‘শোন একটি মুজিবরের কন্ঠে’ গানটি বাঙালির উদ্দীপনা বাড়িয়ে দেয়।
১৯৭১ : ৩ আগস্ট: পাকিস্তান টেলিভিশন থেকে বলা হয় ১১ আগস্ট থেকে সামরিক আদালতে বঙ্গবন্ধুর বিচার শুরু হবে। এই ঘোষণায় বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ এবং উদ্বেগের ঝড় বয়ে যায়। বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রবাসী বাঙালিরা আন্তর্জাতিক বরেণ্য আইনজীবী সন ম্যাকব্রাইডকে ইসলামাবাদে পাঠান। কিন্তু পাকিস্তানি জান্তা সরকার বিদেশী আইনজীবী নিয়োগে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে।
১৯৭১ : ১০ আগস্ট: পাকিস্তানি জান্তা সরকার বঙ্গবন্ধুর পক্ষ সমর্থনের জন্য আইনজীবী একে ব্রোহীকে নিয়োগ দেয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে যখন ২৬ মার্চ ইয়াহিয়া খানের ভাষণের টেপ শোনানো হয় তখন তিনি আত্মপক্ষ সমর্থনে অস্বীকার করেন এবং ব্রোহীকে অব্যহতি দেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের পক্ষে ব্যাপক জনমত তৈরী হয়। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবতা স্পর্শ করতে থাকে।
১৯৭১ : ১১ নভেম্বর: বঙ্গবন্ধুকে ইয়াহিয়া খানের সামনে হাজির করা হয়। ইয়াহিয়ার সঙ্গে ছিলেন ভূট্টো এবং জেনারেল আকবর। ইয়াহিয়া করমর্দনের জন্য হাত বাড়ালে বঙ্গবন্ধু বলেন, দুঃখিত… ওই হাতে বাঙালির রক্ত লেগে আছে। ওই হাত আমি স্পর্শ করবো না। এ সময় অনিবার্য বিজয়ের দিকে এগুতে থাকে আমাদের মুক্তির সংগ্রাম।
১৯৭১ : ২ ডিসেম্বর: বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের মুক্তির সংগ্রাম যখন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে তখন লায়ালাপুর কারাগারে ইয়াহিয়া বঙ্গবন্ধুর কাছে সমঝোতার প্রস্তাব দেন। কিন্তু ঐ সমঝোতা প্রস্তাব বঙ্গবন্ধু ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেন।
১৯৭১ : ১৬ ডিসেম্বর: ত্রিশ লাখ শহীদ এবং তিন লাখ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আসে আমাদের বিজয়। বাঙালি জাতি মুক্ত হয় পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে। কিন্তু মুক্তির অপূর্ণতা রয়ে যায় স্বাধীনতার স্থাপতি তখন নির্জন কারাগারে।
১৯৭২ : ৩ জানুয়ারি: পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে জুলফিকার আলী ভূট্টো করাচীতে ঘোষণা করেন শেখ মুজিবকে বিনা শর্তে মুক্তি দেয়া হবে।
১৯৭২ : ৮ জানুয়ারি: বঙ্গবন্ধু কারাগার থেকে মুক্তি পান। পিআইয়ের একটি বিশেষ বিমানে বঙ্গবন্ধুকে লন্ডনে পাঠানো হয়। ৮ জানুয়ারি ভোরে বঙ্গবন্ধু লন্ডনে পৌঁছেন। তার হোটেলের সামনে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে তিনি ঘোষণা করেন, ‘আমি আমার জনগণের কাছে ফিরে যেতে চাই।’

১৯৭২ : ১০ জানুয়ারি: সকালে তৎকালীণ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী অ্যাডওয়ার্ড হীথের আগ্রহে ব্রিটেনের রাজকীয় বিমান বাহিনীর এক বিশেষ বিমানে বঙ্গবন্ধু নয়াদিল্লী পৌঁছালে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভি.ভি গিরি এবং প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানান। বিমান বন্দরে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘অশুভের বিরুদ্ধে শুভের বিজয় হয়েছে।’ ওই দিন বিকেলে ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিমান বন্দরে অবতরণ করেন। লাখো মানুষের জনস্রোত, বাঁধভাঙা আবেগে অশ্রুসিক্ত জাতির পিতা বলেন, ‘আজ আমার জীবনের স্বাদ পূর্ণ হয়েছে।’ ওই দিন জনসমুদ্রে বঙ্গবন্ধু হৃদয়কাড়া এক ভাষণ দেন। ওই রাতেই তিনি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
১৯৭২ : ১২ জানুয়ারি: দেশে রাষ্ট্রপতি শাসনের পরিবর্তে সংসদীয় শাসন কাঠামো প্রবর্তন করে নতুন মন্ত্রী পরিষদ গঠন করেন এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।
১৯৭২ : ১২ মার্চ:
স্বাধীনতার মাত্র ৫০ দিনের মধ্যে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার শুরু হয়।
১৯৭২ : ২৬ মার্চ: শোষণহীন সমাজ গঠনের অঙ্গীকারের মধ্যে দিয়ে প্রথম স্বাধীনতা দিবস
উদযাপিত হয়।
১৯৭২ :২০ এপ্রিল: শুরু হয় গণপরিষদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা সম্পর্কিত প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়।
১৯৭২ : ৪ নভেম্বর: গণপরিষদে বাংলাদেশের খসড়া শাসনতন্ত্র অনুমোদিত হয়। এ উপলক্ষে প্রদত্ত ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেন, বিজয়ের ৯ মাসের মধ্যে শাসনতন্ত্র দেয়া, মানুষের মৌলিক অধিকার দেয়ার অর্থ হলো জনগণের উপর বিশ্বাস করি।
১৯৭২ : ১৬ ডিসেম্বর:
নতুন সংবিধান কার্যকর করা হয়। বাতিল করা হয় গণপরিষদ।
১৯৭২ : ৭ মার্চ: নতুন সংবিধানের আওতায় বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত
হয়। নির্বাচনে জাতির জনকের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৩০০টির মধ্যে ২৯২টি আসনে
বিজয়ী হয়।
১৯৭৩ : ৩ সেপ্টেম্বর: আওয়ামী লীগ, সিপিবি ও ন্যাপের সমন্বয়ে ত্রিদলীয় ঐক্যজোট গঠিত হয়।
১৯৭৪ : ২৩ সেপ্টেম্বর: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম বাঙালি নেতা হিসেবে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলা ভাষায় বক্তৃতা দেন।
১৯৭৫ : ২৫ জানুয়ারি: দেশে বিরাজমান পরিস্থিতি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু জাতীয় সংসদে চতুর্থ সংশোধনী বিল পাশ করেন। এই বিলের মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়।
১৯৭৫ : ২৫ ফেব্রুয়ারি: রাষ্ট্রপতি এক ডিগ্রীর মাধ্যমে সমস্ত রাজনৈতিক দলের সম্মিলনে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) নামে একটি নতুন একক রাজনৈতিক দল গঠন করেন।

১৯৭৫ : ১৫ আগস্ট: স্বাধীনতা বিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের ষড়যন্ত্রে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারে শহীদ হন।