করোনায় ঢাকায় আরেক জনের মৃত্যু

৩০ পরিবারসহ ভবন ও হাসপাতাল কোয়ারেন্টাইনে

0
844
ফেসবুক থেকে সংগৃহীত ছবি

রাজধানীর মিরপুরে ৭৩ বছর বয়েসী অবসরপ্রাপ্ত এক ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মৃত ব্যক্তি বা তার পরিবারের কেউ সম্প্রতি বিদেশ থেকে আসেননি। তার মৃত্যুর পর রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)-এর নির্দেশে টোলারবাগের বাসভবনটি কোয়ারেন্টাইন করা হয়। এছাড়া হাসপাতালের আইসিইউ শাটডাউন করা হয়েছে। একই সাথে মৃত ব্যক্তির চিকিৎসকদেরও কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে।

শনিবার প্রথমে ফেসবুকে সংবাদটি আসে। বিষয়টি গুজব বা কাল্পনিক বলে অনেকের ধারণা হয়। পরে দৈনিক প্রথম আলো ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সংবাদ প্রকাশ করে।

ফেসবুকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, “মিরপুরে ডেল্টা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই ব্যক্তির মৃত্যুর পর হাসপাতালের ৪ জন ডাক্তার ও দুই জন ইন্টার্নকে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে।

ডেল্টা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসার আগে তিনি আরও তিনটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। তিনটি হাসপাতালের যে চিকিৎসকরা তাকে দেখেছেন তাদের সবাইকে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে।

মিরপুরের টোলারবাগে ওই ব্যক্তি যে ভবনে ছিলেন সেই ভবনটি ৩০টি পরিবারসহ কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। একই সাথে ডেল্টা হাসপাতালের আইসিইউ শাটডাউন করা হয়েছে।

হাসপাতালের কর্মকর্তা ও চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে ফেসবুক পোস্টে দাবি করা হয়, আইইডিসিআর প্রথমে এই রোগীর স্যাম্পল নিতে রাজি হয়নি। পরে নানা মাধ্যমে যোগাযোগ করার পর শুক্রবার দুপুরে পরীক্ষা করার পর তাকে কোভিড-১৯ হিসেবে শনাক্ত করা হয়।  শুক্রবার দিবাগত রাতেই ওই ব্যক্তি মারা যান। তার মৃত্যুর পর হাসপাতাল থেকে আত্মীয় স্বজনরা পালিয়ে যান।”

প্রথম আলো হাসপাতালের নাম উল্লেখ না করে জানাচ্ছে, “এ ঘটনার পর বন্ধ রাখা হয়েছে ওই হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)। কোয়ারেন্টিনে আছেন আইসিইউর চিকিৎসক, নার্স ও ওয়ার্ড বয়রা। এ বিষয়ে হাসপাতাল বা আইইডিসিআরের কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই হাসপাতালের একজন চিকিৎসক প্রথম আলোকে বলেন, রোগী গত মঙ্গলবার কল্যাণপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। তাঁর হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন পরীক্ষা–নিরীক্ষার পরও রোগ ধরা পড়েনি। সেখানে অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় ১৭ মার্চ পৌনে পাঁচটার দিকে কল্যাণপুরের ওই হাসপাতাল থেকে থেকে তাঁকে মিরপুরের হাসপাতালটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে তাঁর শ্বাস–প্রশ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়ায় তাঁকে একজন বক্ষব্যাধি চিকিৎসক পরীক্ষা–নিরীক্ষা করেন। তিনিই প্রথম আশঙ্কা করেন রোগী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন।

ওই হাসপাতাল এ বিষয়ে আইইডিসিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা নমুনা সংগ্রহ করতে অস্বীকৃতি জানায়। বলা হয়, ওই ব্যক্তি বিদেশফেরত নন, তিনি বিদেশফেরত কারও সংস্পর্শেও আসেননি। কিটের স্বল্পতা আছে। ওই চিকিৎসক আরও বলেন, রোগী হাসপাতালে ভর্তির পর তাঁর ব্যাপারে সরকারের উচ্চপদস্থ লোকজন খোঁজখবর করেন। তাঁদের তদবিরেই পরে পরীক্ষা করা হয়। গতকাল মিরপুরের ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হয় রোগী করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন।”