করোনা: আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৭ হাজার

দেশে গত ২৪ ঘন্টায় আরও ৬৪১ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। বর্তমানে এই ভাইরাসে আক্রান্ত ৭ হাজার ১০৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় ৮ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১৬৩ জন।

বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন লাইভ ব্রিফিংয়ে অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।

গতকালের চেয়ে আজ আক্রান্ত ৯২ জন বেশি, ১৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেড়েছে। গতকাল আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫৪৯ জন। এ ছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় দেশে আরও ১১ জন করোনামুক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে ১৫০ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৮ জন মারা গেছেন এর মধ্যে ৬ জন ঢাকার বাকি ২ জন ঢাকার বাইরের। মৃত ৮ জনের মধ্যে ৬ জন পুরুষ, ২ জন নারী। ৪ জনের বয়স ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে। আর ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২ জন।

এখন পর্যন্ত মারা যাওয়া ১৬৩ জনের মধ্যে বেশির ভাগ রোগী ঢাকা বিভাগের। এই বিভাগে এখন পর্যন্ত ১৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি জানান।

ডাক্তার নাসিমা সুলতানা জানান, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ হাজার ৭০৬টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আগের দিন নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল ৪ হাজার ৩০৯টি। আমাদের নমুনা সংগ্রহ আগের দিনের তুলনায় ৯ দশমিক ২১ শতাংশ বেশি। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪ হাজার ৯৬৮টি। আগের দিন পরীক্ষা হয়েছিল ৪ হাজার ৩৩২টি। গতকালের চেয়ে নমুনা পরীক্ষা প্রায় ১৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেশি। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫৯ হাজার ৭০১টি।

অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, করোনা রোগীদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন মাত্র ১ ভাগ আর বাড়িতে থাকে সুস্থ হয়েছেন শতকরা ৩ ভাগ রোগী। গতকাল পর্যন্ত বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৩৮ জন।

তিনি বলেন, করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে যারা বাড়িতে রয়েছেন, তারা আমাদের হটলাইনের মাধ্যমে চিকিৎসা নেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের লক্ষণ ও উপসর্গগুলো মৃদু থাকে। তারা বাড়িতে চিকিৎসা নিয়েই সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। করোনার উপসর্গ যখন শেষ হয়ে যাবে, এর ১৪ দিন পর রোগীর দ্বিতীয় নমুনা নেয়া হয়। এর সাতদিন পর তৃতীয় নমুনা নেয়া হয়। পরপর দুটি পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ এলে আমরা তাদের সম্পূর্ণ সুস্থ বলি।

অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, রাজধানীর ৩টি বেসরকারি হাসপাতালকে করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এগুলো হলো- এভারকেয়ার হাসপাতাল লিমিটেড (সাবেক অ্যাপোলো হাসপাতাল), স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড ও ইউনাইটেড হাসপাতাল লিমিটেড। এখন থেকে এ হাসপাতালগুলোতে যে সব নমুনা পরীক্ষা করা হবে সেগুলো সরকারি ল্যাবরেটরির মোট নমুনার সঙ্গে যোগ করে প্রকাশ করা হবে। তবে তারা শুধু তাদের হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের সরকার নির্ধারিত ফি নিয়ে পরীক্ষা করাতে পারবেন।

অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ১০৪ জন। মোট আইসোলেশনে আছেন ১ হাজার ৩০৪ জন। আর হোম ও প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন ২ হাজার ৫৪৪ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৩৩৭ জন।

তিনি জানান, সারাদেশের ৬৪ জেলা এবং সেখানকার উপজেলায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৬০১টি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৩০ হাজার ৬৩৫ জনকে কোয়ারেন্টাইন সেবা দেয়া যাবে।

নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, স্থল, নৌ ও সমুদ্রবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৬৫৭ জনসহ বাংলাদেশে আসা ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৪২৪ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *