করোনা ভাইরাস নিয়ে মস্করা

[ফেসবুক থেকে নেয়া গল্প, ভিডিও ক্লিপ ও ছবি]

0
865

বাঙালি বেশ রসিকতা প্রিয় জাতি। যে কোন সিরিয়াস বিষয়কে ফানি করে তুলতে জুড়ি নেই। হালকা বিষয়কে সিরিয়াস, আবার সিরিয়াস বিষয়কে হালকা করে ছড়িয়ে দেয়া মুহূর্তের ব্যাপার। ফেসবুক এমন কাজ করাকে আরও সহজ করে দিয়েছে। বিশ্বজুড়ে যখন করোনা ভাইরাস আতঙ্কে ভুগছে, তখন বাংলাদেশে এ নিয়ে শুরু হয়েছ হাস্যরস। অবশ্য ইতালি ফেরত প্রবাসীদের কোয়ারেন্টাইনে যেতে অস্বীকৃতি জানানোতে কাজটা আরও সহজ হয়েছে। গত দুই দিন ধরে ফেসবুকে ঘুরে বেড়াচ্ছে করোনা ভাইরাস বা কোয়ারেন্টাইন নিয়ে একটি গল্প। গল্পটি অবশ্য উড়িয়ে দেয়া যায় না। অন্তত ইতালি ফেরত প্রবাসীদের কাণ্ডে তা যেন যথার্থ রূপ পেয়েছে। কাল্পনিক গল্পটি আর্ট নিউজের পাঠকদের জন্য। গল্পের সাথে বাড়তি আছে ভিডিও ক্লিপ ও কিছু ছবি। যা আমাদের সিরিয়াস বিষয়ের রসিকতারই পরিচয় বহন করে।

“বাংলাদেশীদের নিজ নিজ বাসায় হোম কোয়ারেন্টাইন বি লাইক-

মনির ইতালি থেকে দেশে ফিরে চৌদ্দ দিনের জন্য নিজ বাসায় হোম কোয়ারেন্টাইনে আছে। এই খবর পাওয়ার পরই দূর দূরান্ত থেকে দুনিয়ার আত্মীয় স্বজন ওকে দেখতে আসা শুরু করেছে আপেল, মাল্টা আর হরলিক্স নিয়ে।

রাজশাহী থেকে বড় চাচা এসেছেন চাচী আর চাচাতো ভাইদেরকে নিয়ে। মেজ ফুপা এসেছেন বগুড়া থেকে। সিলেট থেকে এসেছেন খালা খালু। এসে বললেন, ‘শুনলাম তুমি নাকি চৌদ্দ দিন ঘরের ভেতরে থাকবা, তাই তোমার খালা বললো পোলাডারে দেইখা আসি। সে তোমার জন্য রান্না করে নিয়ে আসছে। তোমার প্রিয় ইলিশ মাছ আর গরুর গোস্তের সালুন।’ তারপর সবাই মিলে একসাথে বসে খাওয়াদাওয়া করলো।

বন্ধুরা আসলো কিছুক্ষণ পর সিগারেট আর তাসের প্যাকেট নিয়ে। একসাথে বসে তাস খেলার জন্য। আম্মু মুড়ি মাখিয়ে দিয়ে গেলেন সবাইকে খাওয়ার জন্য।

সন্ধ্যাবেলা মনির বললো, ‘মা সারাদিন বাসায় বসে থেকে বোর হচ্ছি। আমি একটু সামনে থেকে হেটে আসি।’ মনিরের মা বললো, ‘আচ্ছা বাবা, বেশি দূর যাস না কিন্তু। ডাক্তার নিষেধ করে গেছে। অল্প একটু ঘুরেই বাসায় চলে আসিস।’

মনির বেশিদূর গেলো না। শুধু মোড়ের চায়ের দোকান থেকে চা আর সিগারেট খেলো। এলাকার এক মুরুব্বী গম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করলো, ‘তুমিই তো হোম কি বলে তাতে আছো। বাইরে যাওয়া নিষেধ?’

– হ, চাচা। হোম কোয়ারেন্টাইন।

– হ্যা হ্যা, ঐটাই। তো বাজারে যাইতে পারবা না। কিছু দরকার হলে বইলো এনে দিব।

– আচ্ছা চাচা।

– আর পারলে একসময় আমাদের বাসায় এসো। তোমার চাচী বলতেছিলো তোমার কথা। ইতালি যাওয়ার আগে সেই কত ছোট দেখেছে। এখন কত বড় হইছ সেটা দেখবে।

তিন চারদিন পর মনিরের আরো বোরিং লাগা শুরু করলো। সে বাকি হোম কোয়ারেন্টাইন শ্বশুরবাড়িতে পূরণ করার জন্য সেজেগুজে রওয়ানা দিলো। খবর পেয়ে মনিরের শ্বাশুড়ি বড় বড় দুইটা মুরগী জবাই দিলেন। জামাই এতোদিন পর আসছে, তার ওপর অসুস্থ বলে কথা। ভালো খাতিরদারি দরকার।”