মাছের মায়ের পুত্র শোকের মতই অবস্থা রমিজ রাজার। সবসময়ই বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা এবং মিথ্যা তথ্য দেয়া এই রমিজ রাজাকে বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তরা ডাকেন কানকাটা রমজান বা রমিজ্যা নামে। এই রমিজ রাজা এবার বাংলাদেশের ক্রিকেটে দারুণ শুভাকাঙ্খী (!) সেজে এমন সব কথা বলছেন যা রীতিমত আপত্তিকর। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের প্রথম দিন বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সাথে তার গায়ে পরে আলাপ করা এবং উস্কানিমূলক কথাবার্তা সব ভব্যতার সীমা ছাড়িয়েছে।
শুক্রবার বাংলাদেশের তিন আস্থা ও ভরসা মুশফিক, তামিম ও সাকিবকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন এই পাকিস্তানি। মুশফিকের পাকিস্তান না যাওয়াটা পছন্দ হয়নি রমিজের।
সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের আতুরঘর পাকিস্তানে যেতে চাননি মুশফিকুর রহিম। স্পষ্টতই বলে দিয়েছেন নিরাপত্তার কারণে তার পরিবার চায় না মুশফিক পাকিস্তান যাক। ফলে টি-টোয়েন্টি সিরিজের মত টেস্ট সিরিজ খেলতে পাকিস্তান যাওয়া টিম থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল মুশি।
মুশি এই না যাওয়ার সিদ্ধান্তে দারুণ হতাশ রমিজ রাজা। হতাশা প্রকাশের নামে মুশফিকের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইলেন টাইগারদের কঠোর সমালোচক রমিজ। বললেন, বাংলাদেশ দল পাকিস্তান এলো। অথচ শুধু একজন আসছে না শুধু নিরাপত্তার কারণে। এটা ভাল দেখায় না। ভাল শোনায় না। তার সতীর্থরা এখানে এসেছে। শুধু একজন অন্য পথে হাঁটছেন। এটা হতাশার।
মুশফিককে নিয়ে এমন হতাশা প্রকাশের সময় কিন্তু রমিজ রাজা একবারের জন্যও নিজ দেশের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও নিরাপত্তাহীনতা প্রসঙ্গে কথা বলেননি। কথা বলেননি অন্যান্য টেস্ট খেলুড়ে দেশের ক্রিকেটারদের পাকিস্তানে আসার অনীহা নিয়েও।
নিজের গা বাঁচানোর পথটা অবশ্য খোলা রেখেছেন এই কূট কৌশলী। সাফাই গাইলেন। বললেন, এটাও বুঝতে হবে, এটি একজনের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। কিন্তু দলের কথা চিন্তা করুন। তাদের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটসম্যানকে ছাড়া খেলতে এসেছে।
রমিজ রাজার ক্ষোভের জায়গাটা আসলে ভিন্ন। মুশফিকের এমন সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর দারুণ চপেটাঘাত। বাংলাদেশের একজন সিনিয়র ক্রিকেটারের এমন সিদ্ধান্তে প্রভাবিত হতে পারেন অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড বা অন্য দলের কিকেটাররা। তাই মুশির সিদ্ধান্ত কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না পাকিস্তানিরা।
শুক্রবার রমিজ রাজা অপ্রাসঙ্গিকভাবে টেনে আনেন সাকিব আল হাসান প্রসঙ্গও। বললেন, সাকিব আল হাসানের মত অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের কাছ থেকে এমন আচরণ আশা করেননি তিনি।
জুয়াড়িদের সাথে জড়িয়ে পাকিস্তানের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার শাস্তি ভোগ করেছেন। কারও কারও ক্যারয়ার শেষ হয়ে গেছে ম্যাচ গড়াপেটা করতে যেয়ে। সেই প্রসঙ্গে কখনই কথা বলেননি রমিজ রাজা। অথচ নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার সাকিব কোন ম্যাচ গড়াপেটায় অংশ নেননি। জুয়াড়িদের ফাঁদেও পা দেননি। শুধু জুয়াড়িদের যোগাযোগ করার খবরটা সময়মত আইসিসি’কে জানাননি বলে নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে আটকে গেছেন সাকিব।
বাংলাদেশের ব্যাটিং স্তম্ভ তামিম ইকবালকেও খোঁচাতে ছাড়েননি রমিজ। দীর্ঘদিন পর টেস্টে ফেরা তামিম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৩ রান করে আউট হয়ে যান। এ প্রসঙ্গে তামিমকে ‘ভদ্র’ ভাষায় ব্যর্থ বলতে ছাড়েননি বাংলাদেশবিরোধী সাবেক এই পাকিস্তানি ক্রিকেটার।