আবু ভাই। বহু বছর ধরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় মুখ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন মধু দা, কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাখাল দা… তেমনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে আবু ভাই। সেই আবু ভাই আজ সকালে বিদায় নিলেন, জীবন থেকে।
শুক্রবার বিলে ৪টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র, টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য তানবীর সিদ্দিকী তার ফেসবুক টাইম লাইনে খবরটি দিয়েছেন।
স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ছাত্র নেতা-কর্মীদের আস্থাভাজন ছিলেন আবু ভাই। তার কেন্টিনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যিালয়ের সাবেক বা বর্তমান… প্রত্যেক শিক্ষার্থীরই নানা স্মৃতি জড়িয়ে আছে।
আবু ভাইয়ের মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে নেমেছে শোকের ছায়া।
গণমাধ্যম কর্মী মুজতবা হাকিম প্রেটো তার টাইম লাইনে লিখেছেন, “
আবু ভাই
আটের দশকে রাবি ক্যাম্পাসে আবু ভাইয়ের টিনের চালার
রেস্তোরাঁ ছিল সব বাম কর্মীদের আখড়া। তিনি আজ মারা গেছেন। ক্যাম্পাস থেকে
রাজনীতি ফেরারি হওয়ার পর তার দুরাবস্থা শুরু। কর্তৃপক্ষ তার দোকান এমন
জায়গায় সরিয়ে দেয় যে সাধারণ ক্রেতা জোটানোও দায় হয়ে পড়ে। অন্যদিকে অসুস্থ
থাকায় তাকে ভিখিরির মত সাবেক শিক্ষার্থীদের কাছে হাত পাততেও হয়- এজন্য
ঢাকাতেও তাকে আসতে দেখেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা তাকে
ফেরাননি। অনেকেই অনেকভাবে তাকে সহযোগিতা করেছেন।
আমার সাথে তার শেষ দেখা গত মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের ব্যাচের অনুষ্ঠানে গিয়ে। তিনি চাইছিলেন কর্তৃপক্ষকে বলে তার জন্য ভালো জায়গায় দোকান বসানোর ব্যবস্থা করার জন্য আমরা বলি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবন্ধুদের সে কথা বলেও এলাম।
এবার আমাদের ব্যাচের অনুষ্ঠানের ফাঁকে দূরে টঙে চা খেতে গিয়ে দেখি আবু ভাই দাঁড়ানো। বললাম চা খাবেন? একটা বেঞ্চে বসে চা খেয়ে দেয়ে বিল দিতে গিয়ে শুনি আবু ভাই বিল দিয়ে চলে গেছেন। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি তিনি কয়েকশ গজ দূরে ধীরে ধীরে হেঁটে যাচ্ছেন। মানুষটা অনেকের কাছে সাহায্য নিয়েছেন বটে তবে লাঠিতে ভর দেওয়া শরীরটার মেরুদণ্ড ছিল শক্তই। শেষ চা-টা তিনি আমাকে খাইয়ে গেলেন-আমি খাওয়াতে পারলাম না।”