
রহমান মুস্তাফিজের মন্তব্য প্রতিবেদন: করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের প্রধান শর্ত সাবধানতা। সাবধানতা অবলম্বন করতে হাতধোয়া, মাস্ক, গ্লাভস ও হেড কাভার ব্যবহার অন্যতম। এছাড়া যারা করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের সংস্পর্শে যাবেন, বিশেষত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা, তাদের জন্য পারসোনাল প্রোটেক্টিভ ইক্যুইপমেন্ট (পিপিই) ব্যবহার জরুরী। এরমধ্যে রয়েছে সুরক্ষা পোষাক এবং মাস্ক, গ্লাভস ও হেড কাভার ব্যবহার।

দেশে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর প্রথম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েন চিকিৎসক ও নার্সরা। চিকিৎসক ও সচেতন মানুষরা সোচ্চার হওয়ার পর ব্যবস্থা করা হয় পিপিই-এর। সবাই সরকারের এই উদ্যোগের প্রশংসা করলেন। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা পোষাকের একটা বড় অংশ চলে গেল আমলাদের কাছে। তারা সে সব পরে ছবি তুললেন। সেই ছবি ভাইরাল হলো। কিন্তু করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাকাজে সরাসরি যুক্তরা থেকে গেলেন হিসেবের বাইরে। চিকিৎসার জন্য যত চিকিৎসক ও নার্স করোনা ভাইরাস আক্রান্ত বা সন্দেহভাজনদের সংস্পর্শে সরাসরি আসছেন ততজনের কাছে এখনও পৌঁছেনি প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রি। তবে চীন ও ভারতের সহায়তা পৌঁছে যাওয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি আশা করা যাচ্ছে।

সবচেয়ে ভয়ংকর তথ্যটি দিলেন কক্সবাজারের একজন সাংবাদিক। তিনি তার সেলফোনে একটি ছবি তুলেছেন। ছবিটি কয়েকটি মাস্কের। কক্সবাজারের বাহারছড়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মীরা তাদের ব্যবহৃত মাস্ক ধুয়ে রোদে শুকাতে দিয়েছেন। শুকিয়ে গেলেই তারা আবার সেটি ব্যবহার করবেন।
একজন স্বাস্থ্যকর্মী তিন ঘন্টা ব্যবহার উপযোগী মাস্ক ধুয়ে তা আবার ব্যবহার করছেন, এটি তার স্বাস্থ্যের জন্য যেমন ক্ষতিকর, একইভাবে তিনি যার সংস্পর্শে যাবেন (যদি তিনিও আক্রান্ত হয়ে পড়েন) তারজন্যও এটি ক্ষতিকর।
দেশে তৈরি বা চীন থেকে সহায়তা হিসেবে পাওয়া পিপিইগুলো আগে স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঝে বিতরণ হবে এমন প্রত্যাশা যে কোন সচেতন মানুষই করতে পারেন। এই চাওয়ার মধ্যে কোন ভুল নেই। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা এটা যত দ্রুত বুঝবেন ততই মঙ্গল দেশের জন্য, মানুষের জন্য।
গত বুধবার (২৪ মার্চ) কক্সবাজারে প্রথম করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। শুরু থেকেই তিনি বিদেশ থেকে ফেরার তথ্য গোপন করেন। ফলে সেখানকার চিকিৎসাসেবার সাথে সম্পৃক্তরা এমনিতেই রয়েছেন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। এ অবস্থায় মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর ও চাঁদপুরের মতই কক্সবাজারের দিকে বাড়তি নজর দিতে হবে।