মন্তব্য প্রতিবেদন: মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে তুঘলকি কাণ্ড ঘটিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। তারা ভুল ছবি দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদদের। তবে এমন কাজ ভুল নয়, অপরাধের পর্যায়ে পড়লেও তাদের কোন বিচার হবে না বলেই ধরে নেয়া যায়। বিভাগীয় তদন্ত হলে প্রতিবেদনে নিছক ভুল বলেই বিষয়টি ধামাচাপা দেয়া হবে বলে মনে করেন নগরবাসী।
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর পুলিশ রাজধানীতে ডিজিটাল প্রিন্টের বোর্ড স্থাপন করে। এর প্রথম লাইনে লেখা হয়, “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২০”। দ্বিতীয় বাক্যে লেখা হয়, “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের প্রতি আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা”। এই দুই বাক্যের মাঝে ভাষা শহীদদের ছবির জন্য জায়গা রাখা হয়।
ছবির স্থানে ছবি ছাপা হয়েছে। কিন্তু ভাষা আন্দোলনে শহীদ সালাম, বরকত, রফিক, শফিক, জব্বার বা সফিউরের ছবি ছাপা হয়নি। ছবি ছাপা হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সাতজনের। যারা বীরশ্রেষ্ঠ উপাধি পেয়েছেন।
ভাষা আন্দোলনে শহীদদের ছবির পরিবর্তে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের ছবি প্রকাশ করা অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। না জেনে এমন ভুল করার কথা নয়। এই ক্ষেত্রে না জানা যেমন অপরাধ, আবার জেনে ভুল করাও অপরাধ। তাছাড়া, ছাপানোর আগে ডিজাইন করতে হয়েছে। সেই ডিজাইনও নিশ্চয়ই উর্ধ্বতন এক বা একাধিক কর্মকর্তা দেখে অনুমোদন দিয়েছেন।
পুলিশ বাহিনীর অভ্যন্তরে এমন কাজ কে করেছেন তা তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য প্রয়োজনে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা যেতে পারে। ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে ছেলেখেলা যারা করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। নয়তো এমন প্রবণতা বাড়তেই থাকবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। সে তালিকায় অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধার নাম পাম পাওয়া যায়। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে তালিকাটি প্রত্যাহার করা হয়।