করোনা ভাইরাস বৈশ্বিক মহামারীতে পরিণত হওয়ার পর বিশ্ববাজারে মন্দা চলছে। তেলের দাম ঠেকেছে মাইনাসে। প্রায় সব দেশের অর্থনীতিতে ধস নেমেছে। স্থবির অবস্থা শেয়ার বাজারে। কল কারখানা বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে আচমকা খবর, ঊর্ধ্বমুখী সোনার বাজার। গত সাত বছরের মধ্যে সোনার বাজরে এত চাঙ্গা ভাব আর আসেনি।
মঙ্গলবার যে উল্মফন ছিল সোনার বাজারে, বুধবার সেই দাম অব্যাহত ছিল। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল (ডব্লিউজিসি)-এর প্রাইস ইনডেক্স অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের স্পট মার্কেটে মঙ্গলবার প্রতি আউন্স সোনার দাম ওঠে ১ হাজার ৭৪১ ডলার ৯০ সেন্ট।
বিশ্ব বাজারের খবরাখবর দেয়া অনলাইন পোর্টাল মার্কেট ওয়াচ জানাচ্ছে, ২০১২ সালের ডিসেম্বরের পর এটাই স্বর্ণের সর্বোচ্চ স্পট প্রাইস।
মঙ্গলবার দিন শেষ হয় প্রতি আউন্সের দাম ১ হাজার ৭৬১ ডলার ৪০ সেন্টে, যা ২০১৩ সালের পর সর্বোচ্চ মূল্য। বুধবার বাজার শুরু হয় এই ১ হাজার ৭৬১ ডলার ৪০ সেন্ট বেইজ প্রাইস ধরে।
করোনা ভাইরাসের এই আকালে হঠাৎই সোনার দাম বাড়লো কেন? এমন প্রশ্নে উত্তর দিচ্ছেন এই খাতের বিশ্লেষকরা। তাদের ভাষ্য, দুই কারণে দাম বেড়েছে সোনার। প্রথমত, বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ মনে করে বাড়তি সোনা কিনে রাখছেন। ফলে চাহিদা বেড়েছে অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি। দ্বিতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসংস্থান খাতে সৃষ্টি হওয়া অনিশ্চয়তা।
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, বেকার তহবিল থেকে ভাতা নিতে ইতোমধ্যে প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখ মানুষ আবেদন করেছেন। আগামী দিনগুলোতে বেকার হবেন এমন শঙ্কায় থাকা মানুষের সংখ্যাও কম নয়।
করোনা ভাইরাসের কারণে দেশটির অর্থনীতিতে যে স্থবিরতা এসেছে তাতে গতি ফেরাতে এবং সম্ভাব্য মন্দার ক্ষতি আয়ত্ত্বে রাখতে ইতোমধ্যেই মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) ২৩ হাজার কোটি ডলারের সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।
মার্কিন প্রশাসনের এই সতর্কতা আরও বেড়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সম্প্রতি দুইটি মহামন্দার যে তত্ত্ব হাজির করেছে সে কারণে। এমন পরিস্থিতিতে সতর্ক বিনিয়োগকারীরা সোনার বাজারে ঝুঁকবেন এটাই স্বাভাবিক। ফলে বেড়ে গেছে সোনার দাম।