জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সামরিক জান্তার গণহত্যা মামলার রায় দিয়েছে। রায়ে বলা হয়েছে, গণহত্যা থেকে রোহিঙ্গা মুসলমানদের সুরক্ষায় নিজের ক্ষমতার ভিতর থেকে মিয়ানমার সরকারকেই সব পদক্ষেপ নিতে হবে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় (স্থানীয় সময় সকাল ১০টা) নেদারল্যান্ডেসের দ্য হেগ-এ আন্তর্জাতিক আদালতে এ কথা বলা হয়। বিচারপতি আবদুলকাভি আহমেদ ইউসুফ আনুষ্ঠানিকভাবে আদালতের আদেশ ঘোষণা করেন।
মুসলিম অধ্যুষিত আফ্রিকান দেশ গাম্বিয়ার অনুরোধে ১৯৪৮ সালের গণহত্যা কনভেনশন অনুসারে আদালত বেশি কয়েকটি জরুরী পদক্ষেপ মঞ্জুর করে। বিচারক আহমেদ ইউসুফ রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো নিপীড়নের প্রমাণ সংরক্ষণ করতে মিয়ানমারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আইসিজে গাম্বিয়ার আবেদনকে যৌক্তিক মনে করে। গাম্বিয়া তার আবেদনে বলেছিল, গণহত্যা বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দিতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীণ জরুরী পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
আদালত এ প্রসঙ্গে বলেছে, ‘মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীণ কোন পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা সে বিচারের এখতিয়ার এই আদালতের রয়েছে।’ একই সাথে বলা হয়, ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা কনভেনশনের ভিত্তিতে এই মামলা করার মত প্রাথমিক অধিকার গাম্বিয়ার আছে। গাম্বিয়া স্বনামে এই আবেদন করেছে। তারা (গাম্বিয়া) সদস্য দেশ হিসেবে ওআইসি-সহ যে কোন সংস্থা ও দেশের সহযোগিতা চাইতে পারে। তাতে তাদের মামলা করার অধিকার ক্ষুন্ন হবে না।’
গত বছরের ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ-এর পিস প্যালেসে এই মামলার শুনানি হয়। গাম্বিয়ার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন দেশটির বিচার বিষয়ক মন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল আবু বকর তামবাদু।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানে হত্যা, ধর্ষণ ও নিপীড়নের বর্বর ঘটনা ঘটে। পরে, সেনা অভিযান থেকে রেহাই পেতে ২৫ আগস্ট থেকে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। গত চার দশকে অন্তত ১২ লাখ রোহিঙ্গা নিজ দেশ থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।