মন্তব্য প্রতিবেদন: মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ঢাকা মহানগর পুলিশের তুঘলকি কাণ্ড ঘটনার খবর যখন টক অব দ্য কান্ট্রি, তখনই জানা গেল একই কাজ হয়েছে দেশের অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠেও। তারাও ভুল ছবি দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদদের। পুলিশের পাশাপাশি এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ। এমন কাজ ভুল নয়, অপরাধের পর্যায়ে পড়লেও বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রল আর ভাইরালেই সীমাবদ্ধ থাকবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায় মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ একটি ব্যানার বানিয়েছে। এর ডান দিকে ওপরে লেখা আছে, “২১ আমার গর্ব”। নিচে লেখা আছে, “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা”। ব্যানারের বামে ভাষা শহীদদের পরিবর্তে ছাপা হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সাত বীরশ্রেষ্ঠের ছবি। একই কাণ্ড ঘটিয়েছে বিশ্বদ্যিালয়টির ইতিহাস বিভাগও।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস এবং সংগীত বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আরেক কাঠি সরেস। তারা বীরশ্রেষ্ঠদের ছবি দিয়েই ক্ষান্ত হননি। প্রভাতফেরীতে রেখেছেন বীরশ্রেষ্ঠদের ছবি দিয়ে বানানো প্ল্যাকার্ডও।

বিশ্বদ্যিালয়ের ইতিহাস বিভাগ প্ল্যাকার্ড না বানালেও একই ধরনের ব্যানার বানিয়েছে। ব্যানারের ডান দিকে শহীদ মিনারের ছবি। আর ডান দিকে রয়েছে বীরশ্রেষ্ঠদের ছবি।
ইতিহাস এবং সংগীত বিভাগের মত দুইটি বিভাগের এমন কাণ্ড নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। তারা কেউই আর্ট নিউজের সাথে কথা বলতে রাজি হননি। প্রত্যেকেই বলেছেন বিষয়টি স্পর্শকাতর। তারা লজ্জিত।
ভাষা আন্দোলনে শহীদদের ছবির পরিবর্তে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের ছবি প্রকাশ করা অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। না জেনে এমন ভুল করার কথা নয়। এই ক্ষেত্রে না জানা যেমন অপরাধ, আবার জেনে ভুল করাও অপরাধ। এই ব্যানারটি নিয়ে ক্যাম্পাসে ছবি তুলেছেন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, ভাষা শহীদদের পরিবর্তে বীরশ্রেষ্ঠদের ছবি দিয়ে ব্যানার ও ডিজিটাল বোর্ড বানিয়ে সমালোচিত হচ্ছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
স্মর্তব্য, গত বছরের ডিসেম্বরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। সে তালিকায় অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধার নাম পাম পাওয়া যায়। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে তালিকাটি প্রত্যাহার করা হয়।