লম্পট সজীবের স্বীকারোক্তি

আড়ংয়ের বনানী শাখায় ১১ নারীর ৩৬ ভিডিও ধারণ

0
1877
সংগৃহীত ছবি

নারীদের পোশাক পরিবর্তনের দৃশ্য ভিডিও করার কথা স্বীকার করলো আড়ংয়ে কাজ করা এক লম্পট। ২২ বছর বয়েসী সিরাজুল ইসলাম সজীব ১১ জন নারীর পোশাক পরিবর্তনের দৃশ্য ধারণ করার কথা স্বীকার করেছে। আড়ং বনানী শাখার সাবেক সেলসম্যান এই লম্পট যুবক ৩৬টি ভিডিও ক্লিপিংয়ের কথা আদালতে স্বীকার করেছে।

মঙ্গলবার অভিযুক্ত সজীবকে আদালতে হাজির করা হয়। সজীব আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

জানা গেছে, আড়ং বনানী শাখার এক নারী কর্মী ১৬ জানুয়ারি বনানী থানায় তার সাবেক সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম সজীবের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেন। তাতে বলা হয়, ১১ জানুয়ারি রাতে সজীব তাকে সীমান্ত সৈকত নামক আইডি থেকে মেসেঞ্জারে পাঠানো একটি ভিডিও ক্লিপ দেখতে বলে। তাতে তার পোশাক পরিবর্তনের দৃশ্য ছিল। এরপর সজীব তাকে ভিডিও কলে এসে শরীর দেখানোর আহ্বান জানায়। শরীর না দেখালে ক্লিপটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। ওই নারীর অভিযোগ পাওয়ার পর বনানী থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করে।

পুলিশ জানিয়েছে, ভোরের শিশির নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে কয়েকজন নারীর পোশাক পরিবর্তনের ভিডিও ক্লিপ ছাড়া হয়। যা পরে ভাইরাল হয়। সেই ঘটনায় দুই নারী পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি সেলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। সেই ঘটনার তদন্ত চলাকালেই বনানীর অভিযোগটি আসে। ফলে পুলিশ বিষয়টি আমলে নেয়। ভিডিও ক্লিপগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায় সবগুলো ফুটেজ একই পজিশন থেকে ধারণ করা এবং ভিকটিমরা সবাই আড়ংয়ের নারী কর্মচারি। এই ভিডিওগুলো ফেসবুকে আপলোড হয় ভোরের শিশির ও সীমান্ত সৈকত আইডি থেকে। এই বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়ে সজীবকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেয়।

সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের এডিসি নাজমুল ইসলাম জানান, ভোরের শিশির আইডি’র পরিচালনাকারীকে সনাক্ত করার চেষ্টা চলছিল। এই সময় বনানীর ঘটনা সামনে আসায় দেখা যায় একই ব্যক্তি ভোরের শিশির ও সীমান্ত সৈকত আইডি একজনেরই। পরে ২৫ জানুয়ারি সজীবকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ বাদী হয়ে বনানী থানায় মামলা করে।

নাজমুল ইসলাম বলেন, সজীব আদালতে স্বীকার করেছে সে আড়ংয়ের বনানী শাখার ১১ জন নারী কর্মীর ভিডিও ধারণ করেছে। পুলিশ সবগুলো ভিডিও ক্লিপ উদ্ধার করেছে। এ পর্যন্ত চার জন নারী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছে। মামলার অভিযোগপত্রে সবগুলোর উল্লেখ থাকবে।

আড়ং সূত্রে জানা গেছে, নারী সহকর্মীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে অভ্যন্তরীণ তদন্তের পর সজীবকে গেল বছরের ডিসেম্বর মাসে চাকুরিচ্যুত করা হয়। সে চতুর্থ তলায় কর্মচারিদের পোশাক পরিবর্তন রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে সেলফি স্টিকের সাহায্যে নারী কর্মচারিদের পোশাক পরিবর্তনের সময় ভিডিও করতো।

শনিবার তাকে রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় মনিপুর স্কুলের সামনে থেকে গ্রেফতার করে। এসময় তার কাছ থেকে একটি রেড মি ৫ প্লাস ফোনসেট জব্দ করা হয়। ফোনে তার ফেসবুল আইডি লগইন অবস্থায় পাওয়া যায়।