নিজেকে ‘বে-আক্কেল’ বলে সম্বোধন করলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাম প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি নিজেকে এমন বিশেষণ দিলেন। এই ভুলের জন্য তিনি ক্ষমা চাওয়ার কথা আবারও স্মরণ করিয়ে দিলেন।
বৃহস্পতিবার নওগাঁর ১১টি উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি নিজের এই উপলব্ধির কথা জানান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া রাজাকারের তালিকা যাচাই-বাছাই ছাড়াই প্রকাশ করে ‘বে-আক্কেল’-এর মত কাজ করেছি।”
মন্ত্রী বলেন, রাজাকারের তালিকায় ভুল করেছি। প্রত্যাহারও করে নিয়েছি। তাই বলে রাজাকারের তালিকা হবে না, তা নয়। রাজাকারের তালিকা হবেই। এবার আর ভুল হবে না।
মন্ত্রী জানান, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তালিকা নিয়ে আর রাজাকার, আল বদর, আল শামসের তালিকা হবে না। নিবিড় অনুসন্ধান চালিয়ে এবার উপজেলাভিত্তিক রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করা হবে।”
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী জানান, সরকারিভাবে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচয়পত্র দেয়া হবে। প্রস্তুতি চলছে। ২৬ মার্চের আগেই মুক্তিযোদ্ধাদের ছবিসহ পরিচয়পত্র দেয়া হবে। এর আগে, জানুয়ারি মাসেই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রস্তুত হওয়া তালিকা আবারও যাচাই-বাছাই চলছে বলে জানান আ ক ম মোজাম্মেল হক।
জেলা প্রশাসক হারুন-অর রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার ও নওগাঁর সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকার ও ছলিম উদ্দিন তরফদার।
উল্লেখ্য, গত ১৫ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের তালিকা প্রকাশ করে। রাজাকার, আল বদর, আল শামস্, শুজাহিদ কমিটি ও শান্তি কমিটিসহ একাত্তরে যারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে নানাভাবে সহায়তা দিয়েছে এমন ১০ হাজার ৭৮৯ জনের তালিকা প্রকাশ করে। যুদ্ধাপরাধীদের এ তালিকায় বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার নাম থাকায় দেশজুড়ে প্রতিবাদের তীব্র ঝড় ওঠে। পরে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তালিকাটি প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।