করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে গুরুত্ব বেড়েছে স্যানিটাইজারের। বাজারে স্যানিটাইজার পাওয়া কঠিন হয়ে উঠেছে। অনেকেই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি কিনে মজুদ করেছেন। তাই অনেকে পাচ্ছেন না। দামও বেড়েছে। এমন অবস্থায় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবী মানুষের জন্য স্যানিটাইজার তৈরি করে বিনামূল্যে বিতরণ করছে। পরিস্থিতি যা দাঁড়াচ্ছে তাতে ছাত্র ইউনিয়নের একার তৈরি দিয়ে সারা দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। এছাড়া জেলা. উপজেলা পর্যায়ের চাহিদা মেটানোও সম্ভব নয়। স্যানিটাইজার তৈরি করতে যে ব্যয় হয় তার পুরোটাই আসে অনুদান থেকে। এই অনুদানের পথও বন্ধ হওয়ার পথে। পরিস্থিতি খারাপ হলে তৈরি করা স্যানিটাইজারবো পৌঁছানো সম্ভব হবে না। তাই জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও স্বেচ্ছাসেবীরা তৈরি করতে পারেন স্যানিটাইজার।
স্যানিটাইজার তৈরির ফর্মুলা (নিয়ম) ফেসবুকে নিজের টাইম লাইনে পোস্ট করেছেন ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ক্রীড়া সম্পাদক এবং ফার্মেসি বিভাগের ছাত্র শ্যামজিত পাল শুভ্র। স্যানিটাইজার তৈরির উপকরণ ও নিয়মাবলী ভিডিওসহ প্রকাশ করা হলো আর্ট নিউজের পাঠকদের জন্য। প্রয়োজনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যেন তৈরি করা সম্ভব হয়।
কেমিক্যাল যা যা লাগবে:
১০০ মিলি স্যানিটাইজারের জন্য
আইসো প্রোপাইল অ্যালকোহল (৭২-৭৫ মিলি)
গ্লিসারিন (২-৩ মিলি)
অ্যালোভেরা (১-২ মিলি)
লেমন ওয়েল (৪-৫ ড্রপ)
ডিস্টিল ওয়াটার (পরিমাণ মত ১০০ মিলি করার জন্য)
সব কেমিক্যাল আপনি আরমানিটোলার মিটফোর্ডে পেয়ে যাবেন। সেখানে বিভিন্ন গ্রেডের আইসো প্রোপাইল অ্যালকোহল পাওয়া যায়। গ্রেড অনুসারে দাম নির্ভর করবে। আবার ডিমান্ড বেড়ে যাওয়ায় দাম বাড়িয়েও দিতে পারে। টেকনিক্যাল গ্রেডের ক্ষেত্রে দাম লিটার প্রতি ২৫০-৩০০ টাকা করে পড়বে। সিগমা অ্যালড্রিচের টাও পেয়ে যাবেন সেখানেই। সিগমা অ্যালড্রিচের ব্যবহার করা ভালো হবে।
গ্লিসারিন লিটার প্রতি ১২০-১৫০ টাকা করে রাখবে। লেমন ওয়েল এক আউন্স ১০০ টাকা করে নিতে পারে। দোকান অনুযায়ী দামের তারতম্য হয়। ডিস্টিল ওয়াটার প্রয়োজনের চেয়েও বেশী করে নিবেন। কারণ এইটা ধোয়ার কাজেও লাগবে।
অন্যান্য যে জিনিসগুলো বানানোর জন্য লাগবে:
বিকার ( ১ লিটার পরিমাপের)
মেসারিং সিলিন্ডার ( ২০ মিলি পরিমাপেরগুলো হলেই হবে)
স্টিয়ারার / গ্লাস রড
ফানেল
বোতল
বোতল আপনি মিটফোর্ডে পাওয়া যায়। বাকি জিনিসগুলো হাটখোলায় (অভিসার সিনেমা হলের বিপরীতে) পাওয়া যায়।
যে ভাবে করবেন:
একসাথে ১ লিটারের জন্যও করতে পারেন আবার ১০০ মিলির জন্য ও করতে পারেন। যে পরিমাণের জন্য করবেন সে অনুযায়ী উপরে উপাদানগুলো (অ্যালকোহল, অ্যালোভেরা আর গ্লিসারিন) বিকারে নিন। স্টিয়ারার দিয়ে ভালো করে নাড়তে থাকুন। তারপর পরিমাণ মত পানি দিয়ে ১০০০মিলি/১০০ মিলি পূর্ণ করুন। এরপর কয়েক ড্রপ লেমন ওয়েল দেন। তারপর স্টিয়ারার দিয়ে ভালো করে নাড়তে থাকুন, যতক্ষণ না পরিস্কার সল্যুশন আসে। তৈরি হয়ে গেল স্যানিটাইজার। এবার পরিমাণ মত নিয়ে বোতলজাত করুন।
কার্যকারিতা:
৭০ শতাংশ অ্যালকোহল এন্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে। অ্যালকোহলের কারণে স্কিন ড্রাই হয়ে যায় সে জন্য ময়েশ্চারাইজার হিসেবে গ্লিসারিণ অথবা অ্যলোভেরা দেওয়া হয়। আর সুগন্ধের জন্য লেমন ওয়েল। তৈরীর পর বোতলগুলা ৪৮-৭৮ ঘন্টা পৃথক করে রাখুন। তারপর ব্যবহার শুরু করুন।