হতদরিদ্র পুঁজি নিয়ে সিরিজ হাতছাড়া

সিরিজ হাতছাড়া। এখন শঙ্কা হোয়াইট ওয়াশের। দ্বিতীয় ম্যাচেও হেরে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বাহিনী এমনই দশা হয়েছে পাকিস্তান সফরে। সোমবারের শেষ ম্যাচ এখন নিয়ম রক্ষার হলেও টাইগারদের কাছে এটি সম্মান রক্ষার লড়াই। যদিও ওই ম্যাচের জয় পরাজয়ে সিরিজে তেমন ভূমিকা রাখবে না। দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে পাকিস্তান।

শনিবার লাহোর গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আগের দিনের মতই টস জিতেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। প্রতিপক্ষের হাতে বল তুলে দেন এদিনও। দ্বিতীয় দিনেও প্রথম দুই চিত্রের মত তৃতীয় চিত্রটিও ছিল অভিন্ন। ব্যাটসম্যানরা যথারীতি ব্যর্থ ফাইটিং স্কোর গড়তে। আর শেষ অংক যথারীতি বিরহের। মাথা নিচু করেই মাঠ ছাড়েন বাংলাদেশের বোলার ফিল্ডাররা।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ১৩৬ রানের মামুলি সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে এমন হতদরিদ্র সংগ্রহ তাড়া করতে ঘাম ঝরেনি পাকিস্তানের। ২০ বল আর ৯ উইকেট হাতে রেখেই সিরিজের সুবাস নেয় বাবর আজমের দল।

অধিনায়ক বাবর এক ছক্কা আর সাত চারের মারে সাজান নিজের ইনিংস। শেষ পর্যন্ত ৪৪ বলে ৬৬ রান করে থাকেন অপরাজেয়। আরেক ওপেনার আহসান আলী আগের ম্যাচের ধারাবাহিকতা রাখতে পারেননি। আগের ম্যাচে ৩৬ রান করা আহসান আলী এদিন ফেরেন খালি হাতে, বল খরচ করেছেন সাতটি। শফিউলের বলে রিয়াদের হাতে ক্যাচ তুলে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তরুণ আহসান আলী।

আহসান আলীর বিদায়ে দলের বিপর্যয় ঘটতে দেননি ওয়ান ডাউনে নামা অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ হাফিজ। হাফিজের সংগ্রহ হার না মানা ৬৭ রান। ৪৯ বল মোকাবেলার পথে বাউন্ডারি হাঁকান ৯ বার, ছক্কার মার একটি।

বাবর আজম ও মোহাম্মদ হাফিজ ১৩১ রানের জুটি গড়ে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন।

এর আগে, ব্যাট করতে নেমে ব্যর্থতার পরিচয় দেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। সিরিজে টিকে থাকার লড়াইয়ের দিনে তামিম ইকবাল ছাড়া আর কেউই সম্মানজনক রান করতে পারেননি। ৮ ব্যাটসম্যানের ৫ জনই দেখা পাননি দুই অংকের।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মোহাম্মদ নাঈম শেখ শাহীন শাহ আফ্রিদীর বলে ক্যাচ তোলেন উইকেটের পিছনে। প্রথম ম্যাচে দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান নাঈম এদিন ফেরেন প্রথম বলেই। দলীয় রান তখন মাত্র পাঁচ।

ওয়ান ডাউনে নামা মেহেদী হাসানও তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ। ১২ বলে এক ছক্কায় ৯ রান করে বিদায় নেন মেহেদী। মোহাম্মদ হাসনাইনের বলে তিনিও ক্যাচ তোলেন উইকেটের পিছনে।

হাসনাইনের একই ওভারে (পঞ্চম) ক্যাচ তুলেছিলেন তামিম ইকবাল। উইকেটের পিছনে দাঁড়ানো মোহাম্মদ রিজওয়ান নষ্ট করেন সহজ সুযোগ। তামিম লাইফ পান ১৬ রানে।  পনেরতম ওভারে তামিম আরেকবার লাইফ পান। ব্যক্তিগত ৪৪ ও দলীয় ৮৪ রানে মোহাম্মদ হাসনাইন আবেদন করেন এলবিডব্লিউ’র। তার আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দিলে রিভিউ নেন তামিম।

দেশ সেরা এই ওপেনার ৪৪ বলে তার ফিফটি পূর্ণ করেন। শেষ পর্যন্ত ৫৩ বলে করেন ৬৫ রান। তার ইনিংস সাজানো ছিল এক ছক্কা আর ৭ চারে। ১৭ দশমিক ৪ ওভারে, দলীয় ১১৭ রানে আউট হন তিনি। এ ম্যাচেও রান আউট হয়ে ক্রিজ ছাড়তে হয়ে তামিমকে।

অবশ্য তামিমের আগে আইট হন লিটন কুমার দাস ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। শাদাব খানের স্পিন জাদুতে ৮ রান করে আউট হন লিটন। বল খরচ করেন ১৪টি।

অন্য দিকে, ক্রিজে সেট হয়েও বিদায় নেন ধ্রুব। হাসনাইনের বলে থার্ড ম্যানে হারিস রউফের হাতে ক্যাচ তোলেন তিনি বিলাসী শট খেলতে গিয়ে। ২০ বলে একটি করে চার-ছক্কায় ২১ রান করেন ধ্রুব।

ইনিংসের শেষ ওভারে ১২ বলে সমান সংখ্যক রান করে হারিসে বলে উইকেট লন্ডভন্ড হলে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ইনিংস শেষে অপরাজিত দুই ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার (৪ বলে ৮) ও আমিনুল ইসলাম (৫ বলে ৫) যখন মাঠ ছাড়ের স্কোর বোর্ডে তখন ৬ উইকেটে ১৩৬ রানের হতদরিদ্র চেহারা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ১৩৬/৬ (২০ ওভার)। তামিম ৬৫, আফিফ ২১, মাহমুদউল্লাহ ১২, মেহেদী ৯; হাসনাইন ২/২০।

পাকিস্তান: ১৩৭/১ (১৬ দশমিক ৪ ওভার)। হাফিজ ৬৭*, বাবর ৬৬*; শফিউল ১/২৭।

ফল: পাকিস্তান ৯ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: বাবর আজম

সিরিজ: পাকিস্তান ২-০ বাংলাদেশ

তৃতীয় ম্যাচ: ২৭ জানুয়ারি ২০২০ সোমবার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *