হুজি’র বোমা হামলার রায়

১০ জনের মৃত্যুদণ্ড, ২ জন খালাস

0
1759
বাঁয়ে পল্টন ময়দানে সিপিবি'র মহাসমাবেশ, ডানে বোম হামলার পরের ছুব। ছবি দুটি ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারির।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)-এর সমাবেশে বোমা হামলার রায় ঘোষণা হয়েছে। রায়ে ১০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও দুই আসামিকে খালাশে আদেশ দেয়া হয়েছে।

সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টায় ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল আলম এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আদালত পাড়ায় অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়। রায় ঘোষণার সময় আদালতে ৪ আসামি উপস্থিত ছিল।

২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে সিপিবির মহাসমাবেশে বোমা হামলা চালানো হয়। হামলায় নিহত হন মজিদ, আবুল হাশেম, হিমাংশু মণ্ডল ও মুক্তার হোসেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ছাত্র ইউনিয়ন নেতা বিপ্রসাদ।

সিপিবির সে সময়কার সভাপতি মঞ্জুলুল আহসান খান বাদী হয়ে রাজধানীর মতিঝিল থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষ হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে।

বিএনপি নেতৃত্বাধীণ চার দলীয় জোট সরকারের আমলে মামলার তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে কোন তথ্য প্রমাণ পায়নি পুলিশ। ফলে তারা মামলার ফাইনাল রিপোর্ট জমা দেয় আদালতে। তাতে আসামিদের অব্যাহতি দেয়।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়। এর পরের বছর ১৭ আগস্ট সারাদেশে ঠিক একই সময়ে সিরিজ বোমা হামলা হয়। এসব হামলায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেলে আবারও সিপিবির মহাসমাবেশে হামলা মামলার তদন্ত শুরু হয়।

সাত কর্মকর্তা পরিবর্তনের পর মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় সিআইডি পরিদর্শক মৃণাল কান্তিকে। তদন্তকালে তিনি মুফতি মাঈনুদ্দিন শেখকে গ্রেফতার করেন। মাঈনুদ্দিন আদালতে দেয়া তার জবানবন্দিতে জানায়, সিপিবি সমাবেশে হামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত হরকাতুল জিহাদ (হুজি) জড়িত।

২০০৬ সালে মুফতি আবদুল হান্নান ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তাতে সে সিপিবি সমাবেশে হামলায় তার দল হুজির জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।

মৃণাল কান্তি তার তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ২৬ নভেম্বর আদালতে দুইটি চার্জশিট দাখিল করেন। এতে তিনি ১৩ আসামির বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে অভিযোগ গঠন করেন।

আদালত ২০১৪ সালের ২১ আগস্ট হত্যা মামলার চার্জ গঠন করেন। অন্যদিকে, একই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর বিস্ফোরক মামলার চার্জ গঠন করেন আদালত। এরপর সাক্ষ্যগ্রহন করা হয় ৪৬ জনের।

চার্জশিটভূক্ত আসামিরা হলো: মুফতি আবদুল হান্নান, মুফতি মাঈনুদ্দিন শেখ, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, শওকত ওসমান, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা মশিউর রহমান, আবদুল হাই, শফিকুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, নূরুল ইসলাম, মহিবুল মুস্তাকিম, আনিসুল মুরসালিন ও রফিকুল ইসলাম।

আসামিদের মধ্যে ইতোমধ্যেই মুফতি আবদুল হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। অন্য আসামিদের মধ্যে আবদুল হাই, শফিকুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, নূরুল ইসলাম, মহিবুল মুস্তাকিম, আনিসুল মুরসালিন ও রফিকুল ইসলাম পলাতক রয়েছে।এছাড়া মুফতি মাঈনুদ্দিন শেখ, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, শওকত ওসমান, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা মশিউর রহমান বর্তমানে কারাগারে রয়েছে।