নিউজ ডেস্ক: বিদায় নিলেন একজন কিংবদন্তী। শেষ হলো বাংলাদেশের শ্রমিক আন্দোলনের একটি সৎ ও নির্ভীক অধ্যায়ের। মারা গেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড সহিদুল্লাহ চৌধুরী। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত, জনপ্রিয় শ্রমিক নেতা, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)-এর সাবেক সভাপতি।
৩ জানুয়ারি শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় নিজ বাসভবনে তিনি মারা যান। আর্ট নিউজকে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন সিপিবি সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিস হোসেন প্রিন্স।
প্রয়াত সহিদুল্লাহ চৌধুরী জীবনের শেষদিন পর্যন্ত ছিলেন সিপিবির উপদেষ্টামণ্ডলীর অন্যতম সদস্য, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি)-এর সভাপতি ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস্)-এর উপদেষ্টা।
কমরেড সহিদুল্লাহ ১৯৬৪ সালে লতিফ বাওয়ানি জুট মিলে সাধারণ শ্রমিক হিসেবে যোগ দেন। এরপর তিনি ৫০ বছরেরও বেশি সময় তিনি শ্রমিক আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। এরমধ্যে প্রায় তিন দশক তিনি লতিফ বাওয়ানি জুট মিল শ্রমিক ইউনিয়নে নেতৃত্ব দেন। দীর্ঘদিন তিনি পাট-সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক-কর্মচারি সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। অসুস্থ শরীর নিয়েও তিনি ২০২০ সাল থেকে পাটকল শ্রমিক আন্দোলনের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
উল্লেখ্য, সোভিয়েত ইউনিয়নে কমিউনিস্ট পার্টির পতন এবং দেশটি খণ্ড-বিখণ্ড হওয়ার পর বাংলাদেশে সিপিবি-ও ভাঙনের মুখে পরে। এরপর ১৯৯৩ সালের ১৫ জুন বিশেষ কংগ্রেসে কমরেড সহিদুল্লাহ চৌধুরীকে সভাপতি ও মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমকে সাধারণ সম্পাদক করে দলটি পুনর্গঠিত হয়।
কমরেড সহিদুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন সিপিবি সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স। এছাড়াও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিশ্ব ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন (ডব্লিইএফটিইউ) বাংলাদেশ কমিটির সমন্বয়কারী রাজেকুজ্জামান রতন, বিলসের উপ-পরিচালক ইউসুফ আল মামুন প্রমূখ।
সিপিবি’র বিবৃতি
সিপিবি সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স এক যুক্ত বিবৃতিতে কমরেড সহিদুল্লাহ-র মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বলেছেন, বাংলাদেশের শৃমিক আন্দোলনের কিংবদন্তী বীর মুক্তিযোদ্ধা সহিদুল্লাহ চৌধুরী দেশের শ্রমিক আন্দোলনে বিশেষ করে পাটকল শ্রমিক আন্দোলনে কয়েক দশক ধরে নেতৃত্ব দিয়েছেন। শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের অধিকার ও মুক্তির সংগ্রামে আজীবন তিনি লড়াকু ভূমিকা পালন করেছেন। সাম্রাজ্যবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনেও তিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। তার জীবন ও সংগ্রাম নগুন প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
সিপিবি’র কর্মসূচি
৪ জানুয়ারি শনিবার সকাল ৯টায় সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয় শ্রদ্ধা জানানো হবে। এরপর শোক শোভাযাত্রা সহকারে মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হবে। সেখানে জাতির পক্ষ থেকে সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত শ্রদ্ধা জানানো হবে।
কিংবদন্তীর বিদায়/এটি/কিউটি
Leave a Reply