৩০ নভেম্বর ২০২০ (নিউজ ডেস্ক): রাত পোহালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) নির্বাচন। নির্বাচনের পুরো ফোকাসটাই সভাপতি পদ ঘিরে। অন্যান্য পদে আলোচনা কম।
সোমবার (৩০ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে শুরু হবে ভোটগ্রহণ। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান রিয়াজউদ্দিন আহমেদ। সদস্য হিসেবে আছেন মনজুরুল আহসান বুলবুল ও শাহজাহান মিয়া।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে মাস্ক পরে কেন্দ্রে আসার জন্য। এছাড়া হ্যান্ডশেক করা থেকে বিরত থাকারও আহ্বান জানানো হয়েছে ভোটার ও প্রার্থীদের।
রোববার বার্ষিক সাধারণ সভায় সদস্যদের উপস্থিতি ছিল চোখে পরার মত। ধারণা করা হয়েছিল করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার সাধারণ সভায় উপস্থিতির সংখ্যা কম হবে। তা না হয়ে উপস্থিতি ছিল সাম্প্রতিক বছরগুলোর তুলনায় বেশ বেশি।
সাধারণ সভার দিনে প্রার্থীরা দিনভর চালিয়েছেন নির্বাচনী প্রচারণা। ডিআরইউ আঙিনা ছিল সরগরম। রাত ১০টার পরেও ডিআরইউ প্রাঙণে ছিল প্রার্থী ও ভোটারদের আনাগোনা।
এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নজরুল ইসলাম মিঠু (জার্মান নিউজ এজেন্সি), শাহনেওয়াজ দুলাল (সময়ের আলো) ও মুরসালীন নোমানী (বাসস)।এদের মধ্যে শাহনেওয়াজ দুলাল প্রার্থী হয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সাংবাদিক ফোরামের সমর্থন নিয়ে। মুরসালীন নোমানীকে সমর্থন দিয়েছে বিএনপি-জামায়াত ফোরাম। নজরুল ইসলাম মিঠু কোন ফোরামেরই প্রকাশ্য সমর্থন পাননি। তবে দুই ফোরামেরই অনেক সদস্য সমর্থন দিয়েছেন তাকে।
সহ-সভাপতি পদে প্রার্থী বর্তমান সহ-সভাপতি নজরুল কবীর (দেশ টিভি)। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আবুল বাশার নূরু (আমাদের অর্থনীতি) ও ওসমান গণি বাবুল (বাহাত্তর টিভি)।করোনাকালে ও সংগঠনের রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে বিশেষ ভূমিকার জন্য নজরুল কবীরের প্রতি সদস্যদের সমর্থনের পাল্লা ভারী। অন্যদিকে, পরপর তিনবার সহ-সভাপতি পদে পরাজিত ওসমান গনি বাবুলের প্রতি কেউ কেউ এবার সহানুভূতি প্রকাশ করছেন।
সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী তিনজন। দৈনিক সমকালের মসিউর রহমানের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চ্যানেল আইয়ের আবু আল মোরসালীন বাবলা ও খোলা কাগজের তোফাজ্জল হোসেন। এদের মধ্যে মসিউর রহমান সংগঠনের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সাংবাদিক ফোরামের সমর্থন পেয়েছেন। অন্যদিকে, তোফাজ্জল হোসেনকে সমর্থন দিয়েছে বিএনপি-জামায়াত ফোরাম। মাঠের পরিস্থিতি বলছে, মসিউর রহমানের সাথে মোরসালীন বাবলার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে।
যুগ্ম সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫ জন। ফারুক খান (বাংলাদেশ কণ্ঠ), মেহেদী আজাদ মাসুম (দৈনিক জাগরণ), গোলাম জয়নুল আহসান (বাংলাভিশন), আরাফাত দাড়িয়া ও হাফিজ আল আসাদের মধ্যে জয়ী হতে পারেন যে কেউ। তবে ফারুক খানের সাথে মেহেদী আজাদ মাসুমের মধ্যে যে কোন একজনের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
অর্থ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন শাহ আলম নূর (ডেইলি ইন্ডাস্ট্রি) ও শ্যামল কান্তি নাগ (হলি নিউজ)। এদের মধ্যে শ্যামল কান্তি নাগ খানিকটা এগিয়ে আছেন।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সংবাদ প্রতিদিনের আবদুল হাই তুহিনের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আমাদের সময়ের আব্দুল্লাহ আল ক্বাফি ও ইনকিলাবের মইনুল হাসান সোহেল। আবদুল হাই তুহিন অন্যদের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছেন। তবে করোনাকালে ডিআরইউ সদস্যদের নানাভাবে সহায়তা করে মন জয় করে নিয়েছেন মইনুল হাসান সোহেল। ফলে তুহিন ও সোহেলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
দফতর সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আমাদের নতুন সময়ের জান্নাতুল ফেরদৌস পান্না। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মুক্তিযুদ্ধবিরোধী জামাতে ইসলামীর মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামের জাফর ইকবাল।
তথ্য ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক পদে দৈনিক জাগরণের হালিম মোহাম্মদের প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল মোশারেফ (বাংলাদেশের খবর)।বয়স ও অভিজ্ঞতায় হালিম মোহাম্মদের পাল্লাই ভারী।
ক্রীড়া সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান ক্রীড়া সম্পাদক মজিবুর রহমান (কালবেলা)। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ভয়েস অব এশিয়ার মাকসুদা লিসা। ক্রীড়া সংগঠক ও খেলোয়াড় হিসেবে দুইজনই ডিআরইউ প্রাঙ্গণে পরিচিত।
রাইজিং বিডি’র মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন প্রার্থী হয়েছেন আপ্যায়ন সম্পাদক পদে। তার বিপরীতে আছেন মুক্তিযুদ্ধবিরোধী জামাতে ইসলামীর মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামের মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান।
নির্বাহী সদস্যের সাতটি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৯ জন। এরা হলেন, ঢাকা টাইমসের আজিজুর রহমান (রহমান আজিজ), বাংলাদেশ টেলিভিশনের নার্গিস জুঁই ও মাহবুবুর রহমান, ভোরের কাগজের রুমানা জামান, নিউ নেশনের রফিক রাফি, মানবকণ্ঠের জাহাঙ্গীর কিরণ ও মোহাম্মদ ছলিমউল্লাহ (মেজবাহ), দৈনিক বাংলার সায়ীদ আবদুল মালিক এবং বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের এসএম জসিম।
এছাড়া তিন জন সম্পাদক পদে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচিতরা হলেন, নারী বিষয়ক সম্পাদক পদে বৈশাখী টেলিভিশনের রীতা নাহার, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে আরটিভির মাইদুর রহমান রুবেল ও কল্যাণ সম্পাদক পদে নয়াদিগন্তের খালিদ সাইফুল্লাহ।
ডিআরইউ/এএমএম/টিটি