ইলিশ মাছ ধরা, বিক্রি, বিপণন, মজুত ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে সরকার। ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন এ নির্দেশ কার্যকর থাকবে। ইলিশ পাওয়া যায় এমন জলসীমায় এ সময় অন্যান্য সব ধরনের মাছ আহরণও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ইলিশের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে। এ সিদ্ধান্তের আওতায় ৩৬ জেলার ১৫২ উপজেলায় ‘মা-ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২০’ পরিচালিত হবে। নিষিদ্ধ সময়ে সারাদেশের মাছের ঘাট, মৎস্য আড়ৎ, হাট-বাজারে অভিযান চালানো হবে।
১৯৮৫ সালের মাছ রক্ষা ও সংরক্ষণ বিধি (প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন ফিশ রুলস, ১৯৮৫) অনুযায়ী নিষিদ্ধের এ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে কমপক্ষে ১ বছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড বা ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে। দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করলে শাস্তি দ্বিগুণ হবে।
ইলিশ ধরা নিষিদ্ধের সময় জেলেদের ভিজিএফের আওতায় চাল দেবে সরকার।
ঢাকা, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, নরসিংদী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, জামালপুর, চট্টগ্রাম, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর. চাঁদপুর, কক্সবাজার, খুলনা, বাগেরহাট, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, বরিশাল, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা ও ঝালকাঠি জেলায় নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।
মৎস্য অধিদফতরের পরিচালক (অভ্যন্তরীণ)সিরাজুর রহমানকে প্রধান সমন্বয়কারী করে ১০ সদস্যের কেন্দ্রীয় মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। ৫টি বিভাগীয় মনিটরিং টিম গঠন করে বিভিন্ন জেলা মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
ইলিশ সমৃদ্ধ বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় কর্মরত মৎস্য দফতরের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ছুটি বাতিল করে সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
‘মা-ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২০’ উপলক্ষে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষও খুলেছে মৎস্য অধিদফতর। ২২ দিন এই কন্ট্রোল রুমে দায়িত্ব পালনের জন্য কর্মকর্তাও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া নিষিদ্ধ সময়ে রাজধানীর বাজারে মনিটরিংয়ের জন্য মৎস্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ৮টি টিমও গঠন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম জানান, ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালে কোনোভাবেই দেশের জলসীমায় ইলিশ আহরণের অবৈধ প্রচেষ্টা সফল হতে দেয়া হবে না। মা-ইলিশ থাকতে পারে এমন নদীতে কোনো নৌকাকে মাছ ধরতে দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ডের টহলের পাশাপাশি অত্যাধুনিক উপায়ে মনিটর করা হবে যেন কোনো নৌকা বা জাহাজ ইলিশ ধরতে না পারে। এমনকি বিদেশ থেকে কোনো মাছ ধরার যান্ত্রিক নৌযান এলে সেটাকেও আইনানুগ প্রক্রিয়ায় আটক করা হবে।
ইলিশ/কিউটি/আরএম